কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নির্বাচন ঠেকানো যায় না

www.ajkerpatrika.com মহিউদ্দিন খান মোহন প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪

জয়পুরহাট থেকে ফোন করেছিল বন্ধু আজম খান। মাঝেমধ্যেই ফোন করে রাজনীতি-সচেতন আমার এই বন্ধুটি। জিজ্ঞেস করলাম, দোস্ত, তোদের ওদিকে অবরোধ কী রকম হচ্ছে? জবাবে সে বলল, অবরোধ! সেটা আবার কী? বললাম, তুই কি ঘুমিয়ে আছিস নাকি?


জানিস না, দেশব্যাপী বিএনপির ডাকে লাগাতার অবরোধ চলছে? আজম উচ্চ স্বরে হেসে বলল, যেখানে আধা বেলা হরতাল পালন হয় না, সেখানে আবরোধ মানবে কে? শুধু ঢাকার গাড়িগুলো যাচ্ছে না। এ ছাড়া বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, পাবনা, রংপুর, দিনাজপুর সব জায়গায় লোকাল বাস চলাচল করছে। এখন ঢাকায় গাড়ি না যাওয়াকে যদি অবরোধ বলিস তাহলে তা পালিত হচ্ছে বলতেই হবে।


এটা শুধু জয়পুরহাটের চিত্র নয়, গোটা বাংলাদেশের চিত্র। রাজধানী ঢাকা থেকে বড় বড় শহরে যানবাহন চলাচল বেশির ভাগ বন্ধ রয়েছে।


লোকাল পরিবহন চলছে ঠিকঠাকমতোই। ফলে বিএনপির ডাকা অবরোধ কার্যকারিতা হারিয়েছে ইতিমধ্যেই। একই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল ২০১৫ সালে। তখনো দূরপাল্লার যানবাহন আগুন ও পেট্রলবোমার ভয়ে বেশ কয়েক দিন বন্ধ থাকার পরে স্বাভাবিক চলাচল শুরু করেছিল। মাসখানেক পরে অবরোধের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে তিন মাস পর কোনো রকম ঘোষণা না দিয়েই অবরোধকে মৃত ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবারও সে রকম লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দলীয় কর্মীরা মাঠে নামছেন না, জনসাধারণ সহযোগিতা করছে না। কিন্তু অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও-বার্তায় এক দিন বিরতি দিয়ে লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দিয়ে চলেছেন একজন নেতা। এভাবে কোনো গণ-আন্দোলন সংগঠিত করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।


কথা উঠেছে বিএনপির নেতৃত্বের বাস্তবতা অনুধাবনের জ্ঞানগরিমা নিয়েও। তারা কি এটা বুঝতে পারছে না, জনগণের একটি অংশ তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও এই ধরনের নেতিবাচক কর্মসূচিকে তারা সমর্থন করছে না? ভোট হলে এবং সুযোগ পেলে তারা হয়তো বিএনপিকে ভোট দেবে। কিন্তু হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে তারা দলটির পক্ষে মাঠে নামবে না। তারপরও কেন বিএনপির নেতারা একটি আধমরা কর্মসূচিকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছেন? পত্র-পত্রিকার রিপোর্টে ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে, বিএনপির এই কর্মসূচি সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়নি। আর প্রচণ্ড চাপের মুখে না পড়লে কোনো সরকারই যে কোনো আন্দোলনের কাছে মাথা নত করে না, তার প্রমাণ তো আমাদের নিকট অতীতেই রয়েছে। ১৯৯০-এ স্বৈরশাসক এরশাদ পদত্যাগে রাজি হয়েছিলেন গণ-আন্দোলনের চাপে দিশেহারা হয়ে। আর ১৯৯৬-এ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সম্মিলিত আন্দোলনের চাপে পড়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংবিধানে সংযুক্ত করতে বাধ্য হয়েছিল বিএনপি সরকার। এটা স্বীকার করতেই হবে, এখন সেই পরিস্থিতি নেই। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে এলেও সব দলকে সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং অর্থ পাচার রোধে সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা সত্ত্বেও জনগণ রাস্তায় নামেনি।


বাজারে গেলে ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের কারণে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মানুষের উষ্মা প্রকাশের বিষয়টি কর্ণগোচর হয় এটা ঠিক। তবে তা নিয়ে তারা মিছিলে নামতে রাজি নয়। বিএনপি হয়তো বলবে, সরকারের দমননীতির ভয়ে জনগণ কথা বলে না। তবে এটাও ঠিক জনগণ যতক্ষণ প্রকাশ্যে রাস্তায় না নামবে, ততক্ষণ সরকারকে টলানো কোনোমতেই সম্ভব নয়। অবস্থা এখন যে পর্যায়ে এসে ঠেকেছে, তাতে বিএনপি কী করবে, সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। তারা কি চলমান অবরোধ কর্মসূচি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে ফিরে আসবে? নাকি আন্দোলনের লাশ কাঁধে নিয়ে ক্লান্ত পায়ে পথ চলতে থাকবে? সিদ্ধান্ত একান্তই বিএনপির।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও