কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৌচাগারের প্রতি কেন এত অবহেলা

বণিক বার্তা ওবায়দুল্লাহ সনি প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৯

বাঙালি নারীরা শিক্ষায় এখন অনেকটাই এগিয়েছে। এ কথাও অস্বীকার করার কোনো সংগত যুক্তি নেই যে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হলেও উচ্চশিক্ষায় তারা এখনো বেশ পিছিয়ে। প্রাথমিকে পড়ার পর নয় বছর অতিক্রান্ত হতে না হতেই অনেক অভিভাবক মেয়েদের আর বিদ্যালয়ে পাঠান না। গ্রামাঞ্চলে ৪০ শতাংশ মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর আগেই স্কুল ছেড়ে দেয়। মাত্র ১০-১২ শতাংশ দ্বাদশ পর্যন্ত পাঠ শেষ করে। মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকার কারণেই এ চিত্র। এর মধ্যে শৌচাগার সংকট অন্যতম। সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেহাল স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি ওঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্রীদের জন্য পৃথক শৌচাগার রয়েছে মাত্র ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ বিদ্যালয়ে। অর্থাৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় ৬৭ শতাংশ ছাত্রীই এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে আবার ১৮ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শৌচাগারই নেই। 


বেসরকারি সংস্থা ডরপের এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, দেশে প্রায় দুই কোটি ছাত্রীর মধ্যে মাত্র ২০ ভাগ স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবহার করতে পারছে। বাকি ৮০ ভাগ মেয়েই এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ঋতুকালীন গড়ে মাত্র ১০ শতাংশ স্কুলছাত্রী স্যানিটারি প্যাড কিংবা স্বাস্থ্যসম্মত উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ পায়। অন্যরা পুরনো কাপড় বা অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে যা অনেক ক্ষেত্রেই অনিরাপদ। আবার এ সময় শৌচাগার অব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে বেশির ভাগ মেয়ে মাসের চার-পাঁচদিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে। এতে করে ক্লাসের পাঠ থেকে তাদের পিছিয়ে পড়তে হয়। শুধু তা-ই নয়, প্রয়োজনীয় উপস্থিতি না থাকায় অনেক ছাত্রী উপবৃত্তি থেকেও বঞ্চিত হয়। 


কলেজ জীবনের প্রথম দিনটা কখনই ভুলবেন না রুমানা আক্তার (ছদ্মনাম)। কী অস্বস্তির মধ্যেই না সেদিন পড়েছিলেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি এখন সরকারের একটা বাহিনীতে কাজ করছেন। ওইদিনটির স্মৃতিচারণ করে বললেন, ‘ক্লাসের ফাঁকে বাথরুমে গিয়ে মারাত্মক বিপাকে পড়েছিলাম। নোংরা আর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। দেখেই মনে হচ্ছিল নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। দুর্গন্ধে বমি আসছিল। বিদ্যুতের বাল্ব শেষ কবে লাগানো হয়েছে কেউ বলতে পারবে না। খুব জরুরি হওয়ায় ভাঙা দরজাটা কোনো রকমে টেনেটুনে লাগাতেই টয়লেটের ভেতরটায় নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এর মধ্যেই দ্রুত বাথরুম সেরে বের হতেই দেখি বেশ কয়েকজন ছাত্র ঢুকছে। পরক্ষণেই বুঝতে পারি এটি কমন বাথরুম। মেয়েদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই।’ সে চিত্রের পরিবর্তন হয়নি এখনো। দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্যানিটেশন ব্যবস্থা প্রায় একই। এতে করে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে শিক্ষার্থীরা। মেয়েদের সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ঋতুকালীন তারা বিদ্যালয়ে যেতে চায় না কোনো ব্যবস্থা না থাকায়। আবার স্কুলের সময়টায় যেন টয়লেটে যেতে না হয়, সেজন্য তারা পানিও কম পান করে। 


স্যানিটেশন উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও কোথাও কোথাও রয়ে গেছে সমন্বয়হীনতা। ফলে অগ্রগতির সুফল তো মিলছেই না, উল্টো শুদ্ধাচারের অভাবে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এখন উন্নত টয়লেটের ব্যবস্থা হয়েছে। তবে সেটার রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতও যে নিয়মিত করতে হবে। স্যানিটেশনের বিষয়ে শিক্ষকরা সচেতন হলেও তারা এখনো জানেন না এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা কী। অন্যদিকে স্কুলের ফান্ডে অর্থ থাকা সত্ত্বেও ব্যবস্থাপনা কমিটি বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ বিষয়ে তারা যথেষ্ট উদাসীন। কোনো রকমে স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করেই দায় সারতে চায়। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার নিয়ে তখন ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও