
ব্যাংক ঋণ লুণ্ঠনের ‘রবার ব্যারন’ মডেল এখন বাংলাদেশে
‘রবার ব্যারন’ শুনতে শোভন নয়। আক্ষরিক অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘ডাকাত ব্যবসায়ী’। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৮৭০ থেকে ১৯১৪ সালের পুঁজির বিকাশে এদের ভূমিকা খুব আলোচিত। এর সঙ্গে বাংলাদেশের রাঘববোয়াল ব্যবসায়ীদের অবিশ্বাস্য ধনসম্পদ আহরণের পদ্ধতির আশ্চর্যজনক মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সব নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ীকে ‘রবার ব্যারন’ বলা হয় না। দুর্বৃত্তায়িত ব্যবসা কৌশল (রবার) এবং তদানীন্তন মার্কিন রাজনীতির ওপর তাদের অপরিসীম প্রভাবের কারণে তাদের সামাজিক প্রতিপত্তিকে (ব্যারন) ফোকাস করা হয়েছে।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ৫২ বছরে যেসব ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি ধনবান হয়েছেন, তাদের সবাইকে রবার ব্যারনদের বাংলাদেশী সংস্করণ আখ্যায়িত করা সমীচীন হবে না। তবে দেশের অধিকাংশ ধনকুবেরের ক্ষেত্রে অর্থনীতি ও রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন এবং ক্ষমতাসীন শাসক মহলের পৃষ্ঠপোষকতার ব্যাপারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ রকম নেতৃস্থানীয় ধনকুবের ‘রবার ব্যারন’ ছিলেন জন ডি রকফেলার, কর্নেলিয়াস ভ্যান্ডারবিল্ট, এন্ড্রু কার্নেগি, এন্ড্রু মেলন, জন জ্যাকব এস্টর, জে কুক, জেমস বুখানান ডিউক, জেপি মরগান, হেনরি মরিসন ফ্ল্যাগলার, জন সি অসগুড, চার্লস এম শোয়াব, চার্লস ক্রকার, হেনরি ক্লে ফ্রিক, ড্যানিয়েল ড্রু, জে গৌল্ড, জেমস ফিস্ক, জন ওয়ার্ন গেইটস, ইএইচ হ্যারিম্যান, হেনরি ব্রেডলি প্ল্যান্ট, জোসেফ সেলিগম্যান, জন ডি স্প্রেকেলস, চার্লস এইরকেস এবং লেলান্ড স্ট্যানফোর্ড। তাদের ধনসম্পদের আহরণ পদ্ধতি ছিল দুর্বৃত্তায়িত। তারা ঠিকমতো সরকারের কর দিতেন না, অথচ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাধন্য ছিলেন। ১৮৭০-১৯১৪ পর্যায়ে তারা মার্কিন রাজনীতিকে প্রবলভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। তাদের ছল-চাতুরি ও ধূর্ত কূটকৌশলের কারণে মার্কিন শেয়ারবাজার ওয়াল স্ট্রিট এবং অনেক মার্কিন ব্যাংক বেশ কয়েকবার পুঁজি লুণ্ঠন ও টালমাটাল সংকটের শিকার হয়েছিল।
- ট্যাগ:
- মতামত
- আর্থিক সংকট
- ব্যাংক ঋণ
- বিলিওনিয়ার