ডিম আলু পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ: সুফল আসবে তো?
সরকার অবশেষে কয়েকটি নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য বেঁধে দিয়েছে। এখন থেকে প্রতি পিস ডিমের দাম হবে ১২ টাকা। ডিমের বাজারে আগুন লাগার পর সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিল। ডিমের বাজার স্থিতিশীল করতে সরকার প্রয়োজন হলে বিদেশ থেকে ডিম আমদানির সিদ্ধান্তও নিয়েছে। ডিমের দাম নিয়ে কথা বলার আগে ডিম আমদানি নিয়ে দুটি কথা। প্রশ্ন হচ্ছে, ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছে? দেশে যে পরিমাণ ডিম উৎপাদন হয় তা কি দেশের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়?
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, দেশে প্রতি বছরই ডিমের উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৫৫২ কোটি ডিম, ২০২১-২২ অর্থবছরে যা হয়েছে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি। তার মানে গত পাঁচ বছরে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণ। এমনকি গত ছয় মাসেও ডিমের উৎপাদন বেড়েছে। গত মার্চে উৎপাদন ছিল প্রায় ১৫৯ কোটি, জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১০ কোটিতে। শুধু তাই নয়, গত চার বছরের মধ্যে গত জুলাইয়ে নাকি সর্বোচ্চ পরিমাণ ডিম উৎপাদন হয়েছে।
যদিও এটি সরকারি হিসাব। বেসরকারি হিসাব মতে উৎপাদন কম হয়েছে। কম উৎপাদনের সুযোগ নিয়ে বাজারে ডিমের দাম নিয়ে তেলেসমাতি করেছে ডিমের ওই বেসরকারি সিন্ডেকেট। সরকার ডিমের সে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। শুধু ডিম কেন, কোনো পণ্যের সিন্ডিকেটই ভাঙা সম্ভব হয়নি।
তবে ভালো খবর যে বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা কমিশন এগিয়ে এসেছে। তারা ১০ মুরগি খামারি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এই খামারিরাই নিজেদের মধ্যে কারসাজি করে ডিমের দাম বাড়িয়েছে। এখানে ডিমের উৎপাদন কম হয়েছে না বেশি সেটি বড় কথা নয়। দেশে ডিমের উৎপাদন যতোটা না কম (যদি আসলেই কম হয়) তার চেয়ে বাজারে জোগান ও সরবরাহ আরও কম করে বাজারে ডিমের এক কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। তদন্তে ওই খামারিরা দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের জরিমানার বিধান আছে।