চট্টগ্রাম ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হলে পাহাড় ধস আর তাতে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়। রোববার সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ষোলশহর রেলস্টেশন সংলগ্ন আইডব্লিউ কলোনিতে এমনই এক পাহাড় ধসের ঘটনায় বাবা-মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আইডব্লিউ কলোনিতে অন্তত ৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ের নিচে কাঁচা ঘর বানিয়ে নিম্ন-আয়ের লোকজন বসবাস করতেন। সকালে অতিবৃষ্টিতে পাহাড় থেকে মাটি ধসে নিচে ঘরের ওপর পড়ে। তাতে একই পরিবারের চারজন চাপা পড়লে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, খালেক নামে রেলওয়ের এক কর্মচারী এই পাহাড় কেটে বসতি নির্মাণ করেন। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ওই ব্যক্তি নাকি তাদের পুলিশের ভয় দেখাতেন। অনেক সময় পুলিশ নিয়েও আসতেন। এ কারণে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতো না।
খাড়া পাহাড়ে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করায় সেখানকার মাটি নরম হয়ে যায়। ফলে অতিবৃষ্টিতে দেওয়ালসহ ধসে পড়ে পাহাড়ের মাটি। প্রশ্ন হচ্ছে, কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে পাহাড় কাটা ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা হয় কীভাবে? আমরা দেখছি, পাহাড়ের নিচে ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থাপনা যাতে গড়ে না ওঠে, সেজন্য কর্তৃপক্ষ প্রায়ই নির্দেশনা দিয়ে থাকে; কিন্তু তারপরও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না। অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মতো কার্যক্রমে মূলত প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকে। ফলে কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি ও উদ্যোগের প্রতিফলন দেখা যায় না। উলটো প্রশাসনের কারও কারও প্রশ্রয়েই এসব কাজ অবাধে সাধিত হয়, যা জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করা দরকার।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পাহাড় ধসে মৃত্যু
- পাহাড় ধস