জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা বিচার শুরু হইবার পূর্বেই কারাগারে এক বৎসর ধরিয়া যেইভাবে হাজত খাটিতেছেন, উহা অমানবিক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। দুঃখজনক হইলেও সত্য, তিনি জেল খাটিতেছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা নামক বিতর্কিত এমন আইনে, যেই আইনে বিচার শেষ হইবার পূর্বে চাহিলেই অজামিনযোগ্য ধারায় যে কোনো ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা যায়।
আমরা উদ্বেগের সহিত লক্ষ্য করিয়াছি, এই আইনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে অনেককেই হয়রানি করা হইয়াছে এবং ভিন্নমত দমনের হাতিয়াররূপে ব্যবহৃত হইয়াছে। তজ্জন্যই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে এই কালো আইন বাতিল করিয়া নূতন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে সরকার। আমরা মনে করি, খাদিজাকে জামিন দিয়াই তাঁহার বিরুদ্ধে মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভবপর। এই সময়ে খাদিজার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মূল্যবান সময় যদ্রূপ নষ্ট হইয়াছে, তদ্রূপ তাঁহার পরিবারও আর্থিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
আমরা বিস্মিত, যেই ভিডিওর সূত্র ধরিয়া পুলিশ তাঁহাকে গ্রেপ্তার করিয়াছে, তথায় খাদিজা ছিলেন উপস্থাপক মাত্র। উপরন্তু তাঁহার বিরুদ্ধে মামলার সময় বয়স ছিল ১৭ বৎসর। অপ্রাপ্তবয়স্করূপে অভিযুক্তের মামলার যথাযথ প্রক্রিয়াও মান্য করা হয় নাই। ইহার পরও নিম্ন আদালতে বারংবার তাঁহার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যাত হইয়াছে। এমনকি হাইকোর্টে জামিন পাইলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে তাহা মুলতবি রাখা হইয়াছে। খাদিজাকে রাষ্ট্রের জন্য যেইভাবে ভয়ংকররূপে উপস্থাপন করা হইয়াছে, বাস্তবে এই শিক্ষার্থী তেমনটা নহেন বলিয়াই প্রতীয়মান।