মধ্যবিত্তের উত্থান বাংলাদেশে কেউ ঠেকাতে পারেনি: রুবানা হক
আমরা প্রত্যেকেই ছুটছি। কিসের পেছনে ছুটছি, জানি না। কেউ শর্টকাটের পেছনে ছুটছি, কেউ সত্যি নিজের অন্তরের আশাকে ধাওয়া করে বেড়াচ্ছি, কেউ একেবারে গন্তব্যহীনভাবে ছুটছি। এই ছোটার কোনো সংজ্ঞা আসলে নেই, এই গতিরও কোনো সংজ্ঞা নেই।
আমি জানি না, (অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডের) অ্যালিস ও রেডকুইনের গল্পটা আপনারা জানেন কি না। গল্পের মধ্যে একটা দৃশ্য আছে, সেখানে অ্যালিস আর রেডকুইন সমানে দৌড়াচ্ছে। সঙ্গে জায়গাটাও দৌড়াচ্ছে। ওখানে একটা বড় গাছ আছে, গাছটা নড়ছে না। অনেকক্ষণ পর অ্যালিস ক্লান্ত হয়ে রেডকুইনকে বলছে, ‘রেডকুইন, আমি আর তুমি যে এত দৌড়াচ্ছি, গাছ তো জায়গা বদলাচ্ছে না। কিন্তু আমরা তো দৌড়াচ্ছি ঠিকই।’ তখন রেডকুইন উত্তর দেয়, ‘ইট অনলি মিনস দ্যাট উই আর স্লো’(এর একটাই মানে, আমরা মন্থরগতি)।
তার মানে হলো, অ্যাকটিভিটি (কর্মকাণ্ড) মানেই কিন্তু প্রোগ্রেস (প্রগতি) না। আপনি শুধু দৌড়াচ্ছেন, গন্তব্যহীনভাবে দৌড়ালে কিন্তু সেটাকে প্রগতি বলে না। কাজেই মাথায় রাখতে হবে, দৌড় হতে হবে অর্থবহ। যে দৌড় আপনার জীবনকে সার্থক করবে, শুধু সেই দৌড়ই দৌড়াবেন।
একলা দৌড়ানোও কিন্তু শিখতে হয়। যখন দেখবেন সহযাত্রী আপনার সঙ্গে দৌড়াতে পারছে না, একটুও পিছু হটবেন না। কারণ, একা দৌড়ানোর মধ্যে একটা বড় সার্থকতা আছে।
পক্ষপাত ঝেড়ে ফেলুন
নিজের জীবনে, নিজের মাথায় যত পক্ষপাত আছে, সব ঝেড়ে ফেলুন। একদম ধুয়েমুছে সাফ করে দিন। কারণ, পক্ষপাত আসলে আমাদের সমাজকে খেয়ে ফেলছে। আপনি নিজেও জানেন না যে আপনি কতখানি পক্ষপাতদুষ্ট।
একটা পরিসংখ্যান বলে, ১ সেকেন্ডে আমরা ৪০টা জিনিস মাথায় রাখতে পারি। তবে অচেতনে, অবচেতনে প্রায় ১ কোটি ১ লাখ তথ্য আমাদের মাথায় ঢোকে। এর অর্থ, আমরা নানাভাবে প্রভাবিত হচ্ছি। হয় আমাদের পারিপার্শ্বিকতা আমাদের প্রভাবিত করছে, অথবা আমার সন্তান আমাকে প্রভাবিত করছে, অথবা সমাজ প্রভাবিত করছে। এই প্রভাবিত হওয়ার সময় ভুলে গেলে চলবে না যে পক্ষপাতিত্ব একটা বড় দোষ।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- উত্থান
- মধ্যবিত্তের জীবন
- রুবানা হক