ছোটবেলা থেকেই টেলিভিশনে দেখে এসেছি, একটা দেশে একজন রাষ্ট্রপতি থাকেন, যিনি গার্ড অব অনার দেওয়ার সময় সোলজারদের সঙ্গে পা মিলিয়ে হাঁটেন, বন্যার সময় ত্রাণ দেন এবং নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠানে শিশুশিল্পীর অভিনয় দেখে কেঁদে ফেলেন। প্রধানমন্ত্রী যে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তা তো জানতাম না! এমনকি খেলার সাথিদের কাছে এমন থিওরি শুনেছি, প্রধানমন্ত্রী ভোটে জিতলেই কী! তিনি তো মহিলা! ‘মহিলা মানুষ’ তো আর রাষ্ট্রপতি হতে পারে না।
আর একটু বড় হয়ে সমাজবিজ্ঞান পড়তে গিয়ে হোঁচট খেলাম সংসদে নারীদের সংরক্ষিত আসনের কথা পড়ে। বিভ্রান্তিই মেটে না! কী আশ্চর্য! আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী অথচ নারী সংসদ সদস্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন না! বড় হয়ে বুড়ো হতে চলেছি, এখনও সেই সংরক্ষিত আসনের নিয়ম অপরিবর্তিত রয়েছে।
‘সংরক্ষিত’ শব্দের অর্থ বিশেষ উদ্দেশ্যে সতর্কভাবে রক্ষিত বা পালিত। উল্টো দিকে সংসদ সদস্য অর্থ হচ্ছে জনপ্রতিনিধি, যিনি কিনা সংসদে গিয়ে জনগণের দাবিদাওয়া উপস্থাপন করবেন। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে; তারা ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন এবং দায়িত্ব পালন করবেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে, মহিলা আসন সংরক্ষণ করার অর্থ হচ্ছে সংসদ সদস্যদের একাংশের ক্ষমতা ও দায়িত্ব বিশেষ উদ্দেশ্যে সতর্কভাবে পালন করা। কী সেই উদ্দেশ্য! ধরে নিই, ‘নারীসমাজ’-এর দাবিদাওয়া; তা হতে পারে সেলাই মেশিন বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির।
ক্ষমতা কি সংরক্ষণ করা যায়? সম্ভবত যায় না। ক্ষমতার চর্চা করা দীর্ঘ অভ্যাসের বিষয়। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হলেই যে ক্ষমতা আপনাআপনি আসবে, তা নয় এবং তা বোঝা গেল এক ঘটনায়।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ক্ষমতা
- সংরক্ষিত আসন
- আওয়ামী লীগ