বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের নির্মম উল্লাস এখনো কানে বাজে

জাগো নিউজ ২৪ শাহানা হুদা রঞ্জনা প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:০১

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সকালে আব্বা বাংলাদেশ বেতার অন করার পর ভেসে এল মেজর ডালিম এর কণ্ঠস্বর। তাদের অপকর্মের কথা জোর গলায় ঘোষণা করছেন লোকটা। কণ্ঠে নেই কোনো অনুতাপ, বরং ঝরে পড়ছিল চরম ধৃষ্টতা। আব্বা অবুঝের মতো বারবার বলতে লাগলেন, নাহ এ সত্যি নয়। সত্যিই কি বঙ্গবন্ধু আর বেঁচে নেই?


তাহলে এখন কী হবে? এখন আমরা কী করব? আব্বা একেবারে বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন। আব্বার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছিল, তা থেমে যায় কিছুক্ষণের মধ্যে। বুঝতে পারেন সত্যি সত্যি বঙ্গবন্ধু আর নেই। “সব শেষ শেষ হয়ে গেছে” একথা বলেই আব্বা হাউমাউ করে কেঁদে উঠেছিলেন। বলেছিলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটা কি আবার পাকিস্তান হয়ে যাবে?


আমিও সেই ছোট বয়সে স্পষ্ট শুনতে পেয়েছিলাম রেডিওর ঘোষণা: 'শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে।' কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। আব্বা কান্নায় ভেঙে পড়লেন। এর আগে আমি কখনও আব্বাকে কাঁদতে দেখিনি। আম্মাও কাঁদছেন। ওদের কাঁদতে দেখে আমিও বুঝে, না বুঝে কাঁদতে থাকলাম। আমার তখন রাজনীতি বোঝার বয়স নয়, বুঝতামও না। কিন্তু পারিবারিক কারণে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি অসম্ভব টান বা ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল।


আমার আব্বা শামসউল হুদা সেসময় ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রিন্সিপাল ইনফরমেশন অফিসার। আব্বা কাঁদছেন এবং তার হাত-পা থরথর করে কাঁপছিল। বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে খবর জানার চেষ্টা করছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঠিক পাশের বাসায় মাহবুব চাচারা থাকতেন। আব্বা ক্রমাগত সেখানে ফোন করে চলেছেন। অনেক পরে চাচা ফোন ধরে বললেন, “হুদা মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু নাই। ওনাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সবাই খাটের নিচে লুকিয়ে আছি। সেনাবাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে।”


এর আগে ভোরবেলাই আমাদের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে। দৌড়ে আব্বা আম্মার ঘরে গেলাম। সবাই হতচকিত, ভয়ে কুঁকড়ে গেলাম। আমাদের আসাদগেট নিউকলোনির বাসাটা ৩২ নম্বরের খুব কাছেই ছিল। ফলে অত ভোরে গুলির শব্দ যেন ঝনঝন করে এসে আমাদের কানে লাগছিল। যদিও তখনো আমরা জানতে পারিনি বঙ্গবন্ধুর বাসায় গুলি চলছে।


খবর জানার জন্য আব্বা হতভম্ব হয়ে চারিদিকে টেলিফোন করার চেষ্টা করছিলেন। শব্দটা এত কাছ থেকে আসছিল যে কান পাতা যাচ্ছিল না। এরমধ্যে আম্মা হঠাৎ বলে উঠলেন “গুলির শব্দ কি বঙ্গবন্ধুর বাসা থেকে আসছে? ওনাকে কি মেরে ফেললো ? তুমি রেডিও ধর”। আম্মার এই কথার পর আব্বা সম্বিত ফিরে পেয়ে রেডিও অন করেছিলেন।


বয়স কম হলেও সেদিনের প্রতিটি ঘটনা এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে। কারণ পুরো ব্যাপারটার সাথে আমরাও জড়িয়ে ছিলাম পরোক্ষভাবে। আমার বয়স তখন মাত্র ১০ বছর। ১৯৭৫ সালের ১৭ মার্চ আমি আব্বার হাত ধরে গণভবনে গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে। ঐরকম বড়মাপের সুন্দর মানুষ আমি জীবনে প্রথম দেখেছিলাম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও