কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সোমেশ্বরী যাবে কোথায়?

বিডি নিউজ ২৪ নেত্রকোনা পাভেল পার্থ প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৩, ২০:৫৯

অটো ড্রাইভার খোকন মিয়ার বাড়ি ঘুলিগাঁও। সোমেশ্বরী নদী থেকে কিছুটা দূরে। কিন্তু দূরের এই নদীই আজ তাকে জমিন থেকে রাস্তায় নামিয়েছে। সোমেশ্বরীতে এখন রক্ত নাই। হাড়, মাংস, মজ্জা সব টেনে হিঁচড়ে ট্রাকের পর ট্রাকে করে নদীর লাশ যাচ্ছে শহরে। নদীর লাশের টুকরার নাম ‘বালু বাণিজ্য’। আর এই বাণিজ্যের কারণে মাছধরা ও কৃষিকাজ কমেছে চারধারে। কিছু পুরুষ মানুষের গাড়ি চালানোর নতুন কাজ জুটেছে। নেত্রকোণার দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের সাবেক কৃষক বর্তমানে অটোচালক খোকন মিয়াও এমনই একজন। তবে বিরিশিরির রাস্তায় এখন অটো কম। পর্যটক শূন্য। উৎরাইলের আদিবাসী পোশাক ও হস্তশিল্প আর খাবারের দোকানগুলো উঠে গেছে। কারণ বিরিশিরিতে আসা-যাওয়া এখন এক বিরক্তিকর দমবন্ধ যন্ত্রণা। বিরিশিরি থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটারের রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করে বালুর ট্রাক। ভেজা বালু আর পানি ঝরিয়ে ওভারলোড ট্রাকগুলো রাস্তাগুলোকে চুরমার করে কাদাময় করে রাখে প্রতিদিন।


অটো চালিয়ে চলে না খোকন মিয়ার। কিন্তু আহাদ আর মাকে ফেলে যাওয়ার উপায় নেই তার। আর ওই বালুর ট্রাকের কারণেই তাদের এই দুর্দশা। ২ মাস বয়সের আহাদকে রেখে রাস্তায় মারা যান মৌসুমী। জরায়ু সমস্যার কারণে পেটে পানি এসেছিল। একটা গাড়িতে করে তাকে ময়মনিসংহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বালুর ট্রাকের কারণে সেই গাড়ি কোনোমতে শ্যামগঞ্জ যেতে পেরেছিল। রাস্তাতেই মারা যান মৌসুমী। স্ত্রীর মৃত্যুর পর আহাদের বাবা অন্যত্র বিয়ে করেন। অনাথ আহাদকে বাড়িতে এনে লালনপালনের দায়িত্ব নেন খোকন মিয়া। খোকন মিয়ার মায়ের পা ভেঙেছিল। ময়মনসিংহ থেকে প্লাস্টার করে ফেরার পথে বালুর ট্রাকের তৈরি খানাখন্দ ভরা রাস্তায় ঠ্যাকনা খেয়ে পায়ের প্লেট নড়ে যায়। অসুস্থ সেই মা এখন বিছানায়, আর হাসপাতাল নেয়া সম্ভব হয়নি। কেবল আহাদ বা খোকনের মা নয়, বালুর ট্রাকের কারণে খোকন মিয়ার শ্বশুর ফলাশগড়ার আবদুর রহমানও রাস্তায় মারা যান। ২০২২ সনের জুনে তার করোনা হয় এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ময়মনসিংহ নেয়ার পথে বালুর ট্রাকে আটক রাস্তায় তারও নিদারুণ মৃত্যু ঘটে।


এমন ঘটনা বিরিশিরিতে এখন অহরহ ঘটছে। বালুর ট্রাকের কারণে সাধারণের নিরাপদ যাতায়াত দুর্বিষহ হয়েছে। রাতের যে গাড়িগুলো ঢাকা থেকে দুর্গাপুর যায় তারা ভোরে এসে ঝারিয়া আটকে থাকে। অসহায় মানুষ হেঁটে, অটোতে করে বিরিশিরি পৌঁছাতে দুপুর গড়িয়ে যায়। যদিও দুই ঘন্টা অন্তর বালুর ট্রাক এবং পাবলিক গাড়ি যাতায়াতের নিয়ম করা হয়েছে কিন্তু সেটি রাস্তায় আটকে থাকা বালুর ট্রাকের কারণে সম্ভব হচ্ছে না। এলোপাথারি বালু-পাথর উত্তোলনে ভাঙন বেড়েছে এলাকায়, বিলীন হয়েছে বহু গ্রাম। এলাকা ছাড়ছে মানুষ। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য পড়েছে ঝুঁকিতে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও