নারী, কিশোরী ও কন্যাশিশুদের বন্যা প্রস্তুতি
দেশে প্রতিবছর গড়ে ৩১ হাজার বর্গকিলোমিটার প্লাবিত হয় বন্যায়। সন্দেহ নেই, কৃষিপ্রধান দেশে বন্যা বয়ে আনে পলি। জমির উর্বরতা বাড়ায়, মাছের উৎপাদন বাড়ায়। কিন্তু এর জন্য মূল্য চুকাতে হয় সাধারণ মানুষকে। তথ্য বলছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০২২ সালের বন্যায় আক্রান্ত যত মানুষকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছিল, তাদের ৮০ শতাংশই নারী, কিশোরী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশু। খবরটা হয়তো এখনো মনে আছে অনেকের। বন্যার সময় একজন গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নৌকা ভাড়া করতে গিয়ে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে চেয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু ৫০ হাজারের নিচে যাবেন না নৌকার মাঝি।
বন্যার এই মৌসুমে তাই প্রয়োজন বন্যা সতর্কতা ও সচেতনতার। প্রয়োজন সব পর্যায়ের পূর্বপ্রস্তুতি, যেন বন্যায় এবং বন্যা-পরবর্তী সময়ে বন্যাকবলিত মানুষ তার সম্ভাব্য ক্ষতিগুলো কমিয়ে আনতে পারে।
সরকার ও অন্যান্য সংস্থার পক্ষ থেকে দুর্যোগ সচেতনতাঝুঁকি কমাতে ও পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে দুর্যোগপ্রবণ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগবিষয়ক কমিটিগুলো বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্থায়ী আদেশাবলি বা স্ট্যান্ডিং অর্ডারস অন ডিজাস্টারে স্পষ্ট বলা আছে এ বিষয়ে। এই আদেশাবলির ২০১৯ সালের পরিমার্জিত সংস্করণে জেন্ডার সংবেদনশীল দুর্যোগঝুঁকি মোকাবিলার একটি পরিপূর্ণ সংযোজনী যুক্ত করা হয়েছে।
গর্ভবতী নারী, কিশোরী, বৃদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি হ্রাস ও নিরাপত্তা বিধানে দুর্যোগের আগে, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগের পরে সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা কে কী করবেন, তার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে। প্রয়োজন দায়িত্বপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ। নিয়মিত বন্যা-সতর্কতা বার্তা জানা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী তথা গর্ভবতী নারী, কিশোরী, বৃদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাছে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া। স্থায়ী আদেশাবলিতে বর্ণিত কন্টিনজেন্সি প্ল্যান হালনাগাদ করা। সতর্ক থাকা, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকা।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- প্রস্তুতি
- বন্যা দুর্গত
- বন্যা মোকাবেলা