ওলামা লীগের ‘ফিরে আসা’ কীসের ইঙ্গিত?
গত ২০ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতি ও বক্তব্য জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। কারণ ক্ষমতাসীন দলটি এক সময় বলেছিল, ওলামা লীগ তাদের অঙ্গসংগঠন নয়। কারণ অঙ্গসংগঠনের দাবিদার সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে বিব্রত ছিল আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ সম্মেলনে ওলামা লীগ নেতাদের বক্তব্য বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে, তাঁরা বিতর্কিত অতীত মুছে নতুন করে আওয়ামী লীগের ছায়া অন্বেষণে মাঠে নেমেছেন। আওয়ামী লীগও রাজপথে বিরোধীদের মোকাবিলায় ওলামা লীগকে কাছে টানার চেষ্টা করতে পারে।
ওলামা লীগের নামের সঙ্গে ‘আওয়ামী’ শব্দটি থাকলেও তারা অতীতে আওয়ামী লীগের আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডেই বেশি সক্রিয় থেকেছে। কখনও কখনও সরাসরি আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শের প্রতি আঘাত করেছে। যেমন তারা পহেলা বৈশাখ উদযাপন ‘হারাম’ বলে ফতোয়া দিয়েছে। তারা মনে করে, বাল্যবিয়ে নিষিদ্ধ করা ইসলামী বিধানের বিপক্ষ কাজ। তারা হিন্দু লেখকদের লেখা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। সংবাদমাধ্যম ঘাঁটলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওলামা লীগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের তালিকা আরও দীর্ঘ হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ওলামা লীগ কি অতীতের কর্মকাণ্ডকে ভুল হিসেবে স্বীকার করেছে? তাদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা গেছে? অতীতে যাই হোক, বর্তমান নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শকে তাদের নীতি-আদর্শ হিসেবে মেনে নেবে? তারা ২০১৭ সালেও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তখন সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগের বিরাগভাজন হয়েছিল। সুতরাং আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শ মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলেও তা কি আদৌ বাস্তবায়ন হবে?