অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণে যথেচ্ছ ব্যয় করা হলেও মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে অবহেলার যেন সীমা নেই। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবহেলা ঘটতে দেখা যাচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেলায়। জরাজীর্ণ ভবন, শিক্ষার্থীর তুলনায় অপ্রতুল শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক-সংকট, পাঠদানের উপকরণ না থাকা—এ সবকিছুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক চিত্র হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গরিবই থেকে গেল’ শিরোনামে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে রাজধানীর বিদ্যালয়গুলোর দুরবস্থার যে চিত্র পাওয়া গেছে, তাতে সারা দেশের, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাস্তব অবস্থা কতটা শোচনীয়, সেটা সহজেই অনুমেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে খড়িয়ালা বিদ্যালয়টি তার চাক্ষুষ দৃষ্টান্ত।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, বিদ্যালয় ভবনের স্তম্ভের (পিলার) পলেস্তারা উঠে দেখা দিয়েছে ফাটল। বের হয়ে এসেছে ইট-সিমেন্ট। বিদ্যালয়টির ছাদ থেকেও খসে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদের বেশ কয়েকটি জায়গায়ও ফাটল ধরেছে। সিঁড়ির দেয়ালও ভেঙে গেছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪৭। শিক্ষক ৫ জন। শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই প্রাক্-প্রাথমিক স্তরের। প্রশ্ন হলো, এ রকম জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে পাঠের কার্যক্রম কীভাবে চলতে পারে?
বাস্তবে সেই অসম্ভব কাজটিই ঘটে চলেছে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, বিদ্যালয় ভবনটির দুরবস্থার কথা জানিয়ে নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছে, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। বিকল্প না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- জরাজীর্ণ ভবন