গ্রীষ্মে অতি উষ্ণতার বিপদ
সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসটি ছিল দেশের ইতিহাসে অন্যতম উষ্ণ মাস। মাসটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা ছিল ২ ডিগ্রি বেশি। বৃষ্টি কম হয়েছে ৬৬ শতাংশ। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হলেও দিনে গরমের কষ্ট কমেনি। বর্ষার আগের এই সময়ে এখন আবার তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। জলবায়ুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালের গরম রীতিমতো আপদ (হ্যাজার্ড) থেকে দুর্যোগে রূপ নিচ্ছে।
গবেষকেরা বলছেন, অতি উষ্ণ তাপের মধ্যে কেউ যদি টানা ছয় ঘণ্টা থাকেন, তাহলে তাঁর শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন কিডনি, ফুসফুস ও যকৃতের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। এমনকি হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে।
সাম্প্রতিক দুটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ার অধিবাসীদের জন্য গ্রীষ্মকাল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই মৌসুমে উষ্ণতম দিনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার ৬৬ শতাংশ মানুষ ওয়েট বাল্ব গ্লোব টেম্পারেচার বা অতি উষ্ণ তাপমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছেন। ১৯৭৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতি এক দশকে গ্রীষ্মকালে এ ধরনের দিনের সংখ্যা এক থেকে তিন দিন করে বাড়ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণ–পূর্ব এলাকায় এ ধরনের তাপমাত্রা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
কোনো এলাকার তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে এবং তা যদি ছয় ঘণ্টা স্থায়ী হয়, তবে এমন অবস্থাকে অতি উষ্ণ তাপমাত্রা বলা হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ গ্রীষ্মকালে তীব্র গরমের ঝুঁকিতে পড়ে গেছেন। আর দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় এই বিপদ সবচেয়ে বেশি বাড়ছে। এখানকার ৫৩ লাখ মানুষ গরমের সময়ে বাইরে কাজ করতে বের হন। গ্রাম ও শহরের ওই অধিবাসীরা অতি উষ্ণ তাপমাত্রার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে গেছেন।