গ্যাস অনুসন্ধান ও সৌরবিদ্যুতে অন্যরা সফল, আমরা কেন ব্যর্থ
২০২২ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশে চরম জ্বালানিসংকটের ফলে বিদ্যুতের যে ব্যাপক লোডশেডিং চলেছিল, তা ডিসেম্বর ও জানুয়ারির শীতেও খুব একটা কমানো যায়নি, এপ্রিল থেকে তা আবার ভয়াবহ হয়ে উঠবে হয়তোবা। ডিজেল আমদানি-ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য দেশের ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে।
প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও দৈনিক উৎপাদন গড়ে ১০ বা ১১ হাজার মেগাওয়াটে সীমিত রাখতে হচ্ছে। ফলে লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে কয়লার অভাবে রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি চালু করাই যাচ্ছে না।
এই সংকটের জন্য প্রধানত দায়ী আমদানি করা এলএনজি-নির্ভর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদননীতি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, কয়েকজন প্রভাবশালী আমদানিকারককে অন্যায্য সুবিধা দিতেই এই আমদানি করা এলএনজি-নির্ভরতা। তার মানে ইচ্ছাকৃত অবহেলার শিকার হয়েছে গ্যাস অনুসন্ধান, অপর দিকে যথাযথ অগ্রাধিকার পায়নি সৌরবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন। একসময় এলএনজির আন্তর্জাতিক দাম সস্তা থাকায় হয়তো এ নীতি গৃহীত হয়েছিল, কিন্তু এই অতিনির্ভরতা এখন চরম বিপদে ফেলেছে আমাদের।
২০২০ সাল থেকে এলএনজির আন্তর্জাতিক দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় সারা বিশ্বে প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল, ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেই পরিস্থিতি আরও চরম আকার ধারণ করে। অবশ্য এলএনজির দাম এখন কমে এসেছে। গত জুলাই থেকে কমছে তেলের দামও।
এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ যে দেশের স্থলভাগে গত ১৪ বছরে কয়েকটি ছোট ছোট গ্যাসকূপ ছাড়া উল্লেখযোগ্য তেল-গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ভোলা গ্যাসের ওপর ভাসছে বলা হলেও সেই গ্যাস এলএনজি বা সিএনজিতে রূপান্তরিত করে দেশের মূল ভূখণ্ডে আনার কাজটিও এত দিনে শুরু হয়নি! ২০১২ ও ২০১৪ সালে মিয়ানমার ও ভারতের বিরুদ্ধে মামলায় জিতে বিশাল সমুদ্রসীমার নিয়ন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও ৯-১১ বছরেও তেমন কোনো অনুসন্ধান চালানো হয়নি।