কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ভিন্ন রকমের একজন রাজনীতিবিদ

বিডি নিউজ ২৪ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৩, ২১:২৯

মোনায়েম সরকারের বয়স বাড়ছে, যেমন সবারই বাড়ে। দেখতে দেখতে আটাত্তরে পৌঁছে গেলেন। (জন্ম: ১৯৪৫ সালের ৩০ মার্চ) কিন্তু বার্ধক্যের কোনো ছাপ তাঁর ভেতর দেখি না– না তাঁর চিন্তায়, না তাঁর কর্মে।


তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় একটি সংগঠন গড়া উপলক্ষ্যে। সেটির নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান বাংলা প্রচলন সমিতি’। ১৯৬৪ সালের কথা, মোনায়েম তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র। উদ্যোগটির কেন্দ্রে ছিলেন আমাদের অনেকের সুহৃদ ড. মাহফুজুল হক। তাঁর ছিল অদম্য উৎসাহ ও অফুরন্ত কর্মস্পৃহা। আমেরিকা থেকে পিএইচডি করে ফিরেছেন, অনেক কাজ করবেন এমন তাঁর স্বপ্ন। মাহফুজুল হক রাজনীতির ছাত্র ছিলেন, প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দেবেন এমন আগ্রহও এক সময়ে লালন করতেন; কিন্তু সুযোগ ছিল না। সময়টা আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের। পূর্ববঙ্গ ফুঁসে উঠছে। বিক্ষোভের প্রকাশ নানাভাবে ঘটছে। মাহফুজুল হকের উৎসাহে গঠিত আমাদের বাংলা-প্রচলন সমিতিও ছিল ওই বিক্ষোভেরই একটি অংশ।


সমিতির কাজ এগুচ্ছিল মূলত কয়েকজন ছাত্রের উদ্দীপনায়। মোনায়েম সরকার ছিলেন এদের অগ্রগণ্য। এক সময়ে তাঁকে সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভারও গ্রহণ করতে হয়েছিল। আমরা ‘মাতৃভাষা’ নামে একটি সংকলন এবং ‘বাংলা বলুন, বাংলা লিখুন, অন্যকে বাংলা বলতে সহায়তা করুন, অন্যতর রাষ্ট্রভাষা বাংলার পূর্ণমর্যাদা দিন, শহীদের রক্তদান সার্থক করে তুলুন’– এই বক্তব্য সংবলিত সুন্দর একটি পোস্টার প্রকাশ ও প্রচার করেছিলাম। সমিতির উদ্যোগে একটি আলোচনা সভার অনুষ্ঠান হয়। বড় মাপের একটা কাজ ছিল বাংলা বইয়ের প্রদর্শনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। কর্মসূচির সবকটিতেই মোনায়েম সরকারের সাংগঠনিক শক্তি বিশেষভাবে কার্যকর ছিল।

অনেক পরে তাঁর সাংগঠনিক শক্তির সঙ্গে আরেকবার পরিচিত হই। দেখলাম নেতৃত্বদানের ও সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার সেই একই প্রসন্ন কিন্তু দৃঢ় দক্ষতা। সেটি দেখতে পেলাম কবি শামসুর রাহমানের ওপর মৌলবাদী জঙ্গিদের আক্রমণের প্রতিবাদের কর্মসূচি গ্রহণের জন্য আয়োজিত সংস্কৃতিসেবীদের এক সভায়। স্থান ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির একটি মিলনায়তনে। সভা পরিচালনায় ছিলেন মোনায়েম সরকার। অনেকেই অনেক কথা বলছেন, যেমন বলার কথা; কিন্তু দেখলাম মোনায়েম দক্ষতার সঙ্গে আলোচনাকে নিয়ে আসছেন কর্মসূচি ও দায়িত্ব বণ্টনের প্রয়োজনীয় জায়গাটাতে। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সফল ও বড় একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল শহীদ মিনারে।


তাঁর লেখার সঙ্গে আমি পরিচিত। পত্রিকায় পড়েছি, বইতেও পড়ার সুযোগ হয়েছে। ‘নতুন দিগন্ত’ নামে আমরা একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশ করি। এই পত্রিকায় মোনায়েমের আত্মজীবনীমূলক একটি রচনা আমরা ধারাবাহিকভাবে ছেপেছি; নাম ছিল ‘একজন রাজনৈতিক কর্মীর প্রতিচ্ছবি’। রচনাটির সঙ্গে একটি দ্বিতীয়াংশ যুক্ত হয়ে ‘আত্মজৈবনিক’ নাম দিয়ে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে ২০১৪ সালের বইমেলায়।


এই প্রকাশনাটির গুরুত্ব দুই দিক থেকে। প্রথমত, এতে সমাজের একটি ছবি আছে। দ্বিতীয়ত, এতে রয়েছে দেশের চলমান রাজনীতির জানা-অজানা নানা খবর ও তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ। মোনায়েম সরকারের স্মৃতিশক্তি প্রখর ও অভ্রান্ত। বহু ঘটনাকে তিনি ছেঁকে তুলেছেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই মন্তব্য না-করেও নীরব বিশ্লেষণ উপস্থিত করেছেন। এমন অনেক অজানা ঘটনাকে তিনি স্মরণে রেখেছেন, যেগুলো সমাজ ও রাজনীতিকে বোঝার জন্য সহায়ক হয়। তাঁর কাহিনীতে ব্যক্তি অবশ্যই আছেন; কিন্তু ব্যক্তি যে প্রধান হয়ে উঠেছেন তা নয়, এবং যে ব্যক্তিটি উপস্থিত রয়েছেন তাঁর ব্যক্তিত্বটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। সব ঘটনারই তিনি সতর্ক দর্শক, কোথাও কোথাও আবার অনুঘটক।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও