আতঙ্কে ভয়ে মার্চ
এবার গ্রীষ্মকালের সূচনাতেই বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকা-ে দেশের মানুষ আতঙ্কিত হতে শুরু করেছে। বিস্ফোরণের সংবাদে মানুষ এখন এতই ভীত হয়ে গেছে যে, যেকোনো জায়গাতেই তারা একটা বিস্ফোরণ আঁচ করছে। এই আতঙ্ক অবশ্য একদিক থেকে ভালোই। যদি তার প্রতিকার করার জন্য মানুষ ভাবতে শুরু করে। বহু দিন ধরে জরাজীর্ণ ভবনে এখানে মানুষের বাস। বিল্ডিং পরিদর্শক নেই, সিটি করপোরেশনের কোনো দায় নেই। বিস্ফোরক বা নানা ধরনের দাহ্যপদার্থের জন্য নেই কোনো রাষ্ট্রের খবরদারি। এক অনিরাপদ অবস্থায় মানুষ থাকতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমন অনেক নবনির্মিত ভবনে গিয়েছি যেখানে কোনো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই। কোথাও হয়তো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আছে কিন্তু সূর্যালোক বা বাতাস ঢোকার কোনো ব্যবস্থা নেই।
পুরান ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়, কংক্রিটের বা শতাব্দী প্রাচীন সুরকি ছাদের নিচে বাঁশের ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে। সিঁড়িগুলো এতই সরু যে, কোনো দুর্ঘটনায় মানুষ নিচেও নামতে পারবে না। সিঁড়িতেই একজন আরেকজনের ঠেলাঠেলিতে ওখানেই একটা সমাধি হয়ে যেতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাড়িটির দখল রাখতে গিয়ে যেকোনোভাবে জীবনবাজি রেখে এ ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। সরকারের খাজনাও দিতে হচ্ছে। তারপর আছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইনের প্রাচীনব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার মধ্য থেকে এমন একটি অভ্যাস রয়ে গেছে যে, মনে হতে থাকে এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ বাঁচার উপায়। শুধু ঢাকায় নয় জেলা বা উপজেলা শহরে একই অবস্থা। কোথাও কেউ পরিকল্পনায় ধার ধারে না। কোথাও নগর-পরিকল্পনার লোকটি নেই। এ যেন একটা মেঠোপথ, তার দুধারে ইচ্ছামতো বাড়িঘর স্থাপনা গড়ে উঠছে। গ্রামের ধানের জমিতে ইচ্ছামতো বাড়িঘর উঠিয়ে দিগন্ত ঢেকে দিচ্ছে, তাতেও কোথাও কোনো আপত্তি বা নিষেধ নেই।