দুষ্টুমি করলেই শিশুকে মারধর করেন?
শিশুরা দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। কোনো শিশু হয়তো অল্প, কোনো শিশু আবার একটু বেশিই দুষ্টুমি করে। অনেক বাবা-মাই শিশু দুষ্টুমি করলে সহ্য করতে পারেন না। একটুতেই রেগে গিয়ে শিশুকে মারধর করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের আচরণ শিশুর ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে। তার বেড়ে ওঠা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের প্রধান ভরসার জায়গা হচ্ছে বাবা-মা। একটু বিপদে পড়লে দৌড়ে ছুটে এসে সে বাবা-মায়ের কোলেই আশ্রয় নয়। আর তারাই যখন দুষ্টুমি করে, তখন যেন ভুল করেও তাদের গায়ে হাত তুলবেন না। এতে করে লাভের থেকে ক্ষতি হবে বেশি।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে,শিশুদের মারধর করলে তারা খুব ভিরু হয়ে যায়। অবচেতন মনে এই কষ্টের স্মৃতি বার বার ঘুরে ফিরে আসতে পারে। আবার কারোর ক্ষেত্রে জেদ বেড়ে যায়। বাবা-মায়েরা যদি শিশুকে আঘাত করেন, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে প্রতিশোধ প্রবণতা বাড়তে শুরু করে। বড় হয়ে সেও অন্যকে আঘাত করতে পারে। এমনটা নয় যে শিশু সব সময় জেনে-বুঝেই আঘাত করে। কারও কারও ক্ষেত্রে বড় হওয়ার পরেও এমন মানসিকতা থেকে যেতে পারে। এ কারণে শিশুকে মারধর ধরলে তার যে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে তা মনে রাখা দরকার।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, যেসব শিশু বাবা-মার কাছ থেকে লাঞ্ছনা পেতে থাকে, ভবিষ্যতে তাদের অ্যান্টিশোসাল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
এ কারণে বিশেষজ্ঞরা শিশুর জেদ বা ট্যানট্রাম সামলানোর জন্য মারধর বা বকাবকি না করে বিশেষ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। যেমন-
১.শিশুর সঙ্গে নানা চুক্তি করুন। সহজভাবে বললে, যেমন ধরুন তাকে বলতে পারেন এই কাজটি করলে তবেই প্রিয় খেলনাটি সে পাবে। তা না হলে তার কাছ থেকে তা নিয়ে নেওয়া হবে। এতে ভালো ফল পাবেন।
২. দুষ্টুমি করলে তাকে ঘরের কোনে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বসিয়ে রাখুন। এই সময়ে কেউ তার সঙ্গে কথা বলবেন না বা আদর করবেন না।
৩. কথা না শুনলে বাড়ির সবাই একসঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিন। বাচ্চা কথা না শুনলে তার সঙ্গে কেউই যেন কথা না বলে সে দিকে নজর দিন। এই সময় কেউ যদি তাকে আদর করে বা কথা বলে, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এক্ষেত্রে যিনি এই শাস্তি দিচ্ছেন তাকে হয়তো শিশু অসম্মান করতে শুরু করতে পারে। তাই পরিবারের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
৪. দুষ্টুমি বা অন্যায় করলে বাবা-মা তদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে সেকথা বুঝিয়ে দিন শিশুকে। তবে যাই করুন শিশুকে মারধর করবেন না।