
ফুলপরী কেন ছাত্রলীগের ডাকে সাড়া দেবে
‘তদ’ মানে ‘তার’; ‘অন্ত’ মানে ‘শেষ’। সে হিসেবে ‘তদন্ত’ মানে ‘তার শেষ’। কার শেষ? অপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধানের শেষ।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলে ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে কেউ মারধর খেলে, এমনকি মারা গেলে ছাত্রলীগ সাধারণত ‘তদন্ত’ নামক যে বস্তুটি নিয়ে ঘোঁট পাকিয়ে থাকে তার আদি আছে, অন্ত নাই। অনন্তকালীন গুটি চালাচালিতে কী তদন্ত, কেন তদন্ত, কার বিরুদ্ধে তদন্ত—এসব অবজেকটিভ প্রশ্ন একসময় সাবজেক্টিভ ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে যায়। সেই নজির আমরা ঢাবি, কুবি, চবি, রাবিতে বহু দেখেছি। ফুলপরী খাতুনকাণ্ডে এবার ইবিতেও যে তেমন হবে না, সেই ভরসা কই!
সবাই জানে, আবাসিক হলে আসা নতুন ছাত্রছাত্রীদের ‘সিট’ পেতে হলে ছাত্রনেতাদের নজরানা দিতে হয়। অত বড় একেকটা হল! সেগুলো দখল করা; এর মধ্যে কে খেল, কে না খেল; কার শোবার জায়গা দরকার, কাকে সারা রাত মেঝেতে বসিয়ে রাখা উচিত—এসব দেখেশুনে রাখা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। এতসব সামাল দেওয়ার পর নতুন আসা ছাত্র বা ছাত্রী যদি সালাম–কালাম না দেয়, যদি সামান্য ‘সার্ভিস চার্জ’টাও দিতে না চায়, তাহলে মাথা ঠিক থাকে? চর দখলের মতো করে এই হলটাও যে দখল করতে হয়, দখলে রাখতে হয়, সবকিছু ম্যানেজ করে রাখতে হয়, সেই জিনিসটা বুঝতে হবে না!
অতি আমোদের কথা, বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে বুঝদার। হলে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তারা ময়মুরব্বি চিনে ফেলে। তাদের সালাম–কালাম দেয়। কদমবুচি করে। নজরানা দেয়। কিন্তু সমস্যা বাধায় ফুলপরী খাতুনের মতো নাবুঝ বেবোধ ছেলেমেয়ে। তারা কাউকে কিছু না বলে হলটাকে নিজের মামাবাড়ি মনে করে ফট করে উঠে পড়ে। তখন তাদের পিটিয়ে–পাটিয়ে আদবকায়দা শেখানো ছাড়া ছাত্রলীগের আর তো কোনো উপায় থাকে না।