‘আমি’ থেকে ‘আমরা’—জনমুখী রাজনীতির ইঙ্গিত

জাগো নিউজ ২৪ ফারুক যোশী প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩

তারেক রহমান ১৭ মিনিটের একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। লাখো মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে অনেক অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতার মতো তিনি খেই হারাননি, লিখিত বক্তব্যও পাঠ করেননি। অথচ বক্তৃতার প্রতিটি অংশ ছিল উদ্দেশ্যনির্ভর, সংযত এবং পরিকল্পিত। তিনি কথা বলেছেন কম, কিন্তু বুঝিয়েছেন অনেক—ঠিক তাঁর মায়ের রাজনৈতিক ভঙ্গিমার মতোই। আবেগের বদলে যুক্তি, উত্তেজনার বদলে দায়িত্ববোধ—এই বৈশিষ্ট্যই তাঁর বক্তব্যকে আলাদা করে তুলেছে।


২.
বর্তমান বাংলাদেশ এক ধরনের অদ্ভুত অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ‘পাবলিক’ নামের মব যখন-তখন মানুষ ধরে মারছে, বিগত সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করছে। ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়ানোর ঘটনাও কম নয়। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে একটি পরাজিত ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। যারা এসব বিষয়ে উচ্চকণ্ঠ হচ্ছেন, তারাও নানাভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন।


দীপুকে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ছায়ানট ও উদীচীর মতো সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে আঘাত—এসবই উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর ধারাবাহিক তৎপরতার চিত্র। সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের আটকও করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—প্রায় পনেরো মাস ধরে এসব সহিংসতা পুরোপুরি থামানো যাচ্ছে না।


৩.
এত কিছু ঘটে যাওয়ার পরও দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠ থেকে সুস্পষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি বা দিকনির্দেশনা শোনা যায়নি। নির্বাচন সামনে থাকা সত্ত্বেও চারপাশে ছিল এক ধরনের অনিশ্চয়তার আবরণ। বিশেষ করে ওসমান হাদী হত্যাকাণ্ড দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সারা দেশে যদি এর প্রতিক্রিয়া আরও নেতিবাচক হতো, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারতো।


আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে প্রেক্ষাপটে ১২ তারিখ বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠতে পারে। এই মোড় কোন দিকে যাবে, তা অনেকটাই নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীলতার ওপর। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিত—ফলে বিএনপিই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শক্তি।


বড় দলের ক্ষেত্রে অহংকার বা রাজনৈতিক ঔদ্ধত্য প্রত্যাশিত হতেই পারে। কিন্তু তারেক রহমানের বক্তৃতায় কি সেই অহংকারের কোনো ছাপ ছিল? বরং তার বিপরীত চিত্রই উঠে এসেছে। অসুস্থ মাকে নিয়ে তারেক রহমানের ব্যক্তিগত বেদনা তো আছেই, পাশাপাশি একটি দলের কর্ণধার হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক দায়বদ্ধতাটাও গুরুত্বপূর্ণ। খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ নিয়ে তারেক রহমানের লন্ডন থেকে দেশে না ফেরাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন প্রোপাগান্ডা ও নিষ্ঠুর প্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—তাৎক্ষণিকভাবে দেশে না ফেরা কোনো অপরাধ নয়।


সতেরো বছর ধরে তাঁর মায়ের জীবনে স্বস্তির কোনো সময় যায়নি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো তারেক রহমান রাজনীতিতে ধীরপায়ে, হিসেবি হয়ে এগোতে চাইছেন। ৩০০ ফিট এলাকার সমাবেশে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন—


“আমার মা হাসপাতালে। স্বাভাবিকভাবে আমার সেখানে থাকার কথা। কিন্তু দেশ ও আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোও আমার দায়িত্ব।”


এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি আবারও জনগণের সামনে নিজের দায়বোধের জায়গাটি পরিষ্কার করেছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও