স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন: পাস হওয়ার আগেই বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা
সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত কোনো স্বাস্থ্যকর্মী নির্ধারিত অফিস সময়ে অন্য কোথাও সেবা দিলে এক লাখ টাকা জরিমানা। কোনো স্বাস্থ্যকর্মীকে হুমকি দিলে বা আঘাত করলে অথবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করলে তিন লাখ টাকা জরিমানা, এমনকি দুই বছরের দণ্ডও হতে পারে। বেসরকারি হাসপাতালের নিবন্ধন পেতে প্রত্যেক রোগীর জন্য রাখতে হবে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা। আইন অমান্য করলে প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করা যাবে বেসরকারি হাসপাতাল। এমন সব বিধান রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে ‘স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন, ২০২২’-এর খসড়া। এরই মধ্যে খসড়াটি চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সচিব আমার কাছে ফাইল পাঠিয়েছেন। আমি সেটি দেখেছি। এখন এটি আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে ভেটিংয়ে। সেখান থেকে আবার আমার কাছে আসবে। কোনো পরিবর্তন না থাকলে আমরা ক্যাবিনেটে পাঠাব। ক্যাবিনেটে অনুমোদনের পরে যাবে সংসদে।’ তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আগামী সংসদে (অধিবেশনে) এই আইন পাস হবে।’
খসড়ায় রোগীর স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে বলে মনে হলেও তা কতটুকু কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, শুধু কঠোর আইন হলেই হয় না, দরকার সঠিক বাস্তবায়ন। কেউ কেউ আবার এ বিষয়ে নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তাই দেখছেন না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক আইন বাস্তবায়িত হয় না প্রয়োগকারী সংস্থার কারণে।’
জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম বলেন, ‘আপাতত মনে হচ্ছে, রোগীর স্বার্থেই খসড়া হয়েছে। তবে বেসরকারি হাসপাতাল নিবন্ধনের যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলো আদৌ প্রতিপালন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। কারণ, আগেও এ ধরনের শর্ত ছিল। কিন্তু খোদ রাজধানীতেই সরকারের নাকের ডগায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো সেবার নামে যা ইচ্ছে তাই করছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব।’