নিত্যপণ্যের বাজারে মারাত্মক প্রভাব পড়বে
ড. ম. তামিম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালন করেছেন। পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করেছেন কানাডার আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সোসাইটি অব পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি। সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে আজকের পত্রিকার সঙ্গে।
সরকার শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাফল্য দাবি করার পরেও বর্তমানে বিপর্যয়ের কারণগুলো কী বলে আপনি মনে করেন?
ম. তামিম: আমরা তো বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু বর্তমানে বৈশ্বিক কারণে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দেওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। মূল সমস্যা আমাদের জ্বালানি। জ্বালানি খাতকে যদি আমরা উন্নয়ন না করি, তাহলে বিদ্যুৎ আসবে কোথা থেকে? বিদ্যুৎকেন্দ্র তো আমাদের বসে আছে। প্রাথমিক জ্বালানি যদি আমরা সরবরাহ করতে না পারি, তাহলে হাজার হাজার বিদ্যুৎকেন্দ্র করে কোনো লাভ নেই।
আবার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব ছিল। সেটার জন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখার দরকার ছিল। এখন আমরা বলছি, আমাদের ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তবে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্র বাদ দিলে
সেটা ২২ হাজার মেগাওয়াটে পরিণত হয়। এর মধ্যে আবার ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এসব অকেজো
মেশিন থেকে আর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে না। কিন্তু সেই উৎপাদনের বিষয়টি কাগজে-কলমে দেখিয়ে সক্ষমতার মধ্যে ধরা হচ্ছে। আমার মতে, এ বিষয়ে স্বচ্ছতা তৈরি করা উচিত। আমাদের প্রকৃত সক্ষমতাকে সামনে এনে পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার।
দ্বিতীয়ত, আগামী ১০ বছরে আমাদের শিল্প ও আবাসিক খাতে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগবে, সেই হিসাবটা বের করতে হবে। এই পরিকল্পনায় হিসাব কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। তবে অতি উৎপাদন কিংবা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম উৎপাদন নানা বিপর্যয় তৈরি করতে পারে।
তৃতীয়ত, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির সরবরাহ সক্ষমতা বাড়াতে হবে; বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামবৃদ্ধি