বৈষম্যের ঘটনাগুলো এতটা ভয়াবহ, যা গল্পকেও হার মানায়
আমাদের মতো দেশগুলোতে 'মানবাধিকার' খুব ক্লিশে একটি শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ, কিন্তু আদতে মূল্যহীন। সংবিধান বলছে, দেশের সব মানুষ সমান। নারী-পুরুষে, মূলধারার মানুষের সঙ্গে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের কোনো ভেদাভেদ হবে না। কিন্তু প্রকৃত চিত্র কি তাই?
এই সমাজের ছবি একেবারেই উল্টো। যারা পাচ্ছেন, তারা অতিরিক্ত পাচ্ছেন। অনেকে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছেন। আর অধিকাংশ মানুষ কিছু না পেয়ে ক্ষমতাহীন ও মূল্যহীনই থেকে যাচ্ছেন।
আমরা যারা রাজার মতো ঘুরে বেড়াই, তারা কখনো কি ভেবেছি যে একদিন যদি শহরের সব ময়লা-আবর্জনা কেউ পরিষ্কার না করেন, ঈদ উৎসবের পর কোরবানির বর্জ্য যদি অপসারিত না হয়, যদি জুতা সেলাই করার জন্য কোনো মুচি না পাওয়া যায়, যদি মরদেহ কেউ সৎকার না করেন, যদি ময়নাতদন্ত করার সময় কেউ চিকিৎসককে সাহায্য না করেন, জেলেরা যদি মাছ ধরা বন্ধ করে দেন, ধোপারা যদি কাপড় ধোয়া বন্ধ করে দেন, তাহলে কি এই সমাজ টিকে থাকবে? না, টিকে থাকবে না। বরং সভ্যতা দারুণভাবে বিপর্যস্ত হবে। অথচ এরপরেও আমাদের সমাজে জাত প্রথা ভয়ংকরভাবে চলমান।
সভ্যতা ও আধুনিকতার এই পর্যায়ে পৌঁছেও আমরা স্বীকার করতে চাই না যে 'সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।' এই বোধের অভাব এবং মূলধারার মানুষের অজ্ঞতা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করেছে এবং এখনো তা সমাজে টিকে আছে।
আমরা যারা নিজেদের বড় বা শ্রেষ্ঠ বলে মনে করি, তারা কি জানি, যে মানুষগুলোকে শুধু পেশাগত কারণে হেয় বা ছোট বলে মনে করা হয়, তারা আসলে কারা? তাদের কাজ সমাজে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য? অন্যান্য যেকোনো পেশার মতোই তাদের কাজও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
- ট্যাগ:
- মতামত
- মানবাধিকার
- বৈষম্য
- ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী