বিএমএ, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ও শহীদ ডা. মিলন

কালের কণ্ঠ অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৩:৪৫

১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের আমলে ‘জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি’ বিষয়টা সামনে চলে আসে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা এ দেশের চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)’ শুরু থেকেই দেশে একটি গণমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য দাবি-লড়াই-আন্দোলন করে আসছে। এ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও মেডিক্যাল শিক্ষার উন্নয়নে বিএমএর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ১৯৯০ সালে চিকিৎসকদের প্রাণের দাবি ২৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন চলছিল। এই দাবিতে চিকিৎসকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় ছিল না, ছিল গণমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা বাস্তবায়নে নীতিমালা প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ, অবকাঠামো সংস্কার, বাজেট, মেডিক্যাল শিক্ষা সংস্কারসহ নানা অতীব জরুরি বিষয়।


১৯৯০ সালের জানুয়ারি থেকেই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল যে এরশাদ সরকার একটা স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে। ৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে জেনারেল এরশাদ চিকিৎসকদের জাতির সামনে অন্যায়ভাবে হেয় করে বক্তব্য দিলেন। এতে চিকিৎসক সমাজ স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হলো। ডা. মাজেদ ও ডা. জালালের নেতৃত্বাধীন বিএমএ তখন একদিকে কর্মসূচি দিল এবং অন্যদিকে দেশব্যাপী চিকিৎসকদের সংগঠিত করার জন্য সাংগঠনিক সফরে বের হলো। এরই মধ্যে অনেকটাই পরিষ্কার এরশাদের গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি। বিএমএর নেতৃত্বে গোটা দেশের চিকিৎসকরা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধ। ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি এরশাদ বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে এ দেশের চিকিৎসকদের চূড়ান্ত সমালোচনা-অবমাননা করে জাতির সামনে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ঘোষণা করলেন। এই নীতিতে বিএমএ বা চিকিৎসকসহ কোনো মহলেরই কোনো মতামত নেওয়া হয়নি।


বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেই স্বাস্থ্যনীতি ছিল একেবারে অবাস্তব। বিএমএ এবং সব রাজনৈতিক দল তা প্রত্যাখ্যান করে। ২৭ জুলাই ছিল বিএমএর পূর্বঘোষিত শহীদ মিনারে জাতীয় চিকিৎসক মহাসমাবেশ এবং বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিশেষ সাধারণ সভা। সেখান থেকে ‘গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি বাতিল ও ২৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন’-এর জন্য চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ, কর্মবিরতি, গণসংযোগ, সভা-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে দেশের চিকিৎসক সমাজ বিএমএর নেতৃত্বে ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলে। অবশেষে ১৪ আগস্ট চিকিৎসকদের তুমুল আন্দোলনের মুখে সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদ স্বাক্ষরিত একটি প্রেস নোট বিএমএর কাছে প্রেরণ করা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। প্রেস নোটের বক্তব্য ছিল ‘সরকারের প্রস্তাবিত জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ১৯৯০-এর রূপরেখা নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার অবসান হওয়া প্রয়োজন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এরই মধ্যে ৫ আগস্ট, ১৯৯০-এ চিকিৎসক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি নতুন স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করার জন্য আহবান জানিয়েছেন। ওই আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দেশের জনগণের কল্যাণে একটি সর্বজনস্বীকৃত নতুন স্বাস্থ্যনীতি বিএমএ এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত পেশাজীবী ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিমূলক সংগঠন ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও মতামত বিনিময়ের মাধ্যমে প্রণয়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই উদ্দেশে সরকার একটি কমিটি গঠন করবে। ’ বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত প্রেস নোট সম্ভবত এই একটিই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও