জি২০ সম্মেলন ও আগামী দিনের কূটনীতি
বিশ্ব কূটনীতির আসর এখন সরগরম। রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রতিদিন নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করছে। কখনো ইউক্রেনের কোনো অংশকে পরাস্ত করছে রাশিয়া, কখনো কোনো অংশের দখল নিতে চাইছে। আবার অনেক সময় ইউক্রেন বাধা দিয়ে রাশিয়াকে পিছু হটতে বাধ্য করছে। এই পরিস্থিতিতে চীন ও পাকিস্তান অক্ষ প্রকাশ্যে রাশিয়ার সঙ্গে আছে। কিন্তু ভারতবিরোধী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কারণে ভারত এই অক্ষ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
কাজেই এখন যখন জি২০-এর ১৭তম শীর্ষ সম্মেলনে ভারত সভাপতিত্ব করতে চলেছে এবং ২০২৩ সালের সারা বছর ধরে এই সম্মেলন হবে, তখন ভারতের এই সভাপতিত্বের যে সুযোগ, তার পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর কারণ একদিকে যে রকম জি২০-এর সভাপতিত্ব করছে ভারত; অন্যদিকে এই বছরে নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসবাদ দমন বিষয়ক যে কমিটি, সেখানেও সভাপতিত্ব করছে ভারত। সে কারণে সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসবাদ দমন বিষয়ক কমিটির বৈঠক হয়ে গেল মুম্বাই শহরের তাজ হোটেলে। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর ২৬ নভেম্বরের মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে বিস্ফোরণের স্মৃতি সামনে রেখে সন্ত্রাসবাদবিরোধী বক্তব্য পেশ করলেন। তিনি বেইজিং এবং পাকিস্তানকেও একটা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যাতে ভারতের ওপর এই সন্ত্রাসবাদের কার্যকলাপ কোনোভাবে কোনো দেশ প্রশ্রয় না দেয়।
স্বভাবতই একদিকে বিশ্বমানবিকতা, গোটা পৃথিবীকে একটা পরিবার হিসেবে গড়ে তুলে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’—এই বাণী নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সম্মেলন শুরু করতে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি এই মঞ্চটাকে ব্যবহার করে উপমহাদেশে ভারতের যে প্রাধান্য, আধিপত্য, সেগুলোকেও প্রতিষ্ঠা করতে তিনি মরিয়া।
জি২০ সম্মেলনের মূল দর্শনটা হচ্ছে, একটা পৃথিবী একটা পরিবার। সে কারণে এই একটা পৃথিবীর একটা পরিবারের যে লোগো জি২০-এর জন্য ভারত তৈরি করেছে, সেটাও অভিনব। সেখানে ভারতের জাতীয় ফুল পদ্মকে ব্যবহার করা হয়েছে। ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতিতে, সভ্যতায়, পুরাণে এবং ভারতীয় শাস্ত্রে বারবার বলা হয়েছে যে পদ্ম হলো শুভ, পবিত্র এবং অনন্ত। এই পদ্মফুলকে ব্যবহার করে গোটা পৃথিবীর কাছে একটা বিশ্বভ্রাতৃত্বের বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্যও অঙ্গীকার দেওয়া হয়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- জি-২০ সম্মেলন