 
                    
                    ছাত্রলীগে ৪ দশকে পদ বেড়েছে ৫ গুণ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের একটি বড় অংশ ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে আসা। ছাত্র অবস্থায়ই তাদের অধিকাংশই কর্মগুণে দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন, যা তাদের জাতীয় রাজনীতির পথ সুগম করে। তখন ছাত্রলীগের পদসংখ্যা ছিল খুবই কম। দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ছিল আলাদা মূল্যায়ন। অথচ চার দশকের ব্যবধানে ছাত্রলীগের পদ বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি। ৩০১ সদস্যের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত অন্য নেতাদের সেখানে নামমাত্র কার্যক্রম রয়েছে। এর বাইরে বর্ধিত কমিটির নামে চিঠি দিয়ে আরও অন্তত অর্ধসহস্রজনকে কেন্দ্রীয় নেতা ঘোষণা করা হয়েছে। এতে অবস্থা এমন হয়েছে-নিজ সংগঠনের নেতারাও একে অন্যকে নামে বা চেহারায় চিনতে পারছেন না। এক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে না। ফলে কমিটির কাঠামো বড় হলেও আসছে না যোগ্য নেতৃত্ব।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ছাত্রলীগের ২৯টি কমিটি হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭০ সালের পর হয়েছে ১৮টি। ১৯৭৭ সালে ছাত্রলীগের কমিটির আকার ছিল মাত্র ৫৯ জনের। তখন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ছিল মাত্র একটি। সহসভাপতি পদও ছিল ৭টি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ছিল মাত্র ৬৯টি। ২০০২ সালেও কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল ১০১ সদস্যের। অথচ বর্তমানের ৩০১ সদস্যের কমিটিতে সহসভাপতিই রয়েছেন ৬১ জন। এই কমিটিতে যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ১১ জন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ১১ জন রয়েছেন। এর বাইরে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠি পেয়ে অসংখ্যজন ‘কেন্দ্রীয় নেতা’ পরিচয় দিচ্ছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ধিত কমিটিতে পদপ্রাপ্তদের কোনো তালিকা ঘোষণা করেনি ছাত্রলীগ। ফলে এদের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিগত তিনটি কমিটিতে পদ ঘোষণার এমন ধারা কমবেশি অব্যাহত ছিল।
ছাত্রলীগের দপ্তর সেল, বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্ব পালনকারী অন্তত ৩০ জন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে উল্লিখিত সব তথ্য। জানতে চাইলে ১৯৭০-১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা নূরে আলম সিদ্দিকী যুগান্তরকে বলেন, সংগঠনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কলেবর বৃদ্ধি করে কোনো লাভ নেই। এতে অনাসৃষ্টি বাড়ে। অন্তর্দ্বন্দ্ব, বিরোধ, সংঘাত, সংশয় সৃষ্টি হয়। আমাদের সময়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সংগঠনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। সংগঠন ছিল সবার ওপরে। তখন বঙ্গবন্ধু চেতনার প্রতীক ছিলেন। কিন্তু ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছিল না। সম্পূর্ণভাবে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম স্বকীয় সত্তায় উজ্জীবিত ছিল। এখন ছাত্রলীগ অঘোষিত অঙ্গসংগঠন হয়ে গেছে। ফলে সংগঠনে বিড়ম্বনা বাড়ছে।
 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                