মিয়ানমার সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের করণীয় কী হবে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত তুলে ধরছেন। তারা বলছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আমরাও মনে করি, শান্তিপূর্ণ তথা কূটনৈতিক পন্থায়ই এ সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে।
এটা ঠিক, গত কয়েকদিনে মিয়ানমারের নিক্ষেপ করা বেশ কয়েকটি মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে পড়েছে। বাংলাদেশের আকাশসীমায় বারবার ঢুকে পড়ছে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার। মর্টার শেলের আঘাতে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ঘুমধুমসহ সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের দিন কাটছে চরম আতঙ্কে। সীমান্তজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা। সেখানে সীমিত করা হয়েছে লোক চলাচল।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ারও চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নীরব থাকতে পারে না। তবে প্রশ্ন হলো, করণীয় কী?
পরিস্থিতি দেখে এখন পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে তা হলো, মিয়ানমারের এ গোলা নিক্ষেপ ও অন্যান্য তৎপরতার লক্ষ্য বাংলাদেশ নয়। সীমান্তরক্ষীসহ বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য হলো, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে দেশটির বিদ্রোহী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে। উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ বিষয়টি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ সংঘাতে বাংলাদেশ জড়িয়ে পড়তে পারে না। তবে এ প্রশ্নও সংগত যে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধাবস্থার খেসারত কেন দিতে হবে বাংলাদেশকে? হতে পারে, এটি মিয়ানমারের একটি ফাঁদ। তারা বাংলাদেশকে এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার জন্য উসকানি দিচ্ছে। জড়িয়ে পড়লেই মিয়ানমারে বসবাসরত বাকি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে পারে। হতে পারে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেটাই চাচ্ছে। তারা এ ধরনের কোনো ফাঁদ পেতে থাকলে এবং তাতে আমরা পা দিলে সেটা আমাদের জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।