নির্বাচনী রোডম্যাপ ও আস্থার সংকট
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সংশয়ী মানুষরা বলছেন, রোডে যত খানাখন্দক তাতে ম্যাপ নিয়ে রাস্তা চেনা যাবে কিন্তু চলতে গেলে হোঁচট খেতে হবে প্রচুর। খানাখন্দকে পূর্ণ রাস্তায় গাড়ি যত ভালোই হোক না কেন চালক পূর্ণ গতিতে বা নিশ্চিন্তে চালাতে পারে না। ফলে চলাচলের জন্য বাহন গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো রাস্তা। সেই রাস্তার নকশা বা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তাদের নকশা অনুযায়ী নির্বাচন হবে ডিসেম্বরের শেষে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে।
বাংলাদেশের জনগণকে বলা হয় সবচেয়ে বেশি নির্বাচনে আগ্রহী জনগণ। নির্বাচনকে তারা উৎসবের মতোই মনে করতেন। সেই দেশে নির্বাচন দিন দিন যেভাবে বিতর্কিত হয়ে পড়েছে তাতে নির্বাচন তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে অনেকাংশে। তাই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা যা সংবিধান কর্র্তৃক নির্ধারিত তা কতটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন পালন করবেন তা দেখার আগ্রহ মানুষের আছে।
নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট হবে। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরের আসনগুলো। তারা জানিয়েছেন তাদের লক্ষ্য ৫টি যথা : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, স্বচ্ছ নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও সুষ্ঠু নির্বাচন। যদিও সুষ্ঠু নির্বাচন যদি প্রধান লক্ষ্য হয় তাহলে এই লক্ষ্যের মধ্যেই বাকি সবগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে তবুও তারা আলাদা আলাদা করে বলেছেন। হয়তো তারা ভেবেছেন এতে প্রতিটি বিষয়ের গুরুত্ব বেশি অনুভূত হবে। তারা বলেছেন সুষ্ঠু ভোটে বাধা বা চ্যালেঞ্জ ১৪টি আর বাধা উত্তরণের উপায় ঠিক করেছেন তারা ১৯টি। তাদের কাছে তিনটি চ্যালেঞ্জ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থার অভাব। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলসমূহের আস্থা থাকা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো : নির্বাচনের সময় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কতটা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে? তৃতীয় চ্যালেঞ্জ : নির্বাচনে ইভিএমের প্রতি রাজনৈতিক দলের অনাস্থা দূর করবেন কীভাবে?