সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ হোক
গত ৭ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে স্কুলছাত্র মিনহাজুল ইসলাম মিনাজ নিহত হলে বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। এ বিষয়ে কয়েক দিন ধরে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশ-ভারত একে অন্যের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশের জনসাধারণকে আশ্রয়, প্রশিক্ষণ, যুদ্ধ সহায়তা দিয়েছে।
প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রটির প্রতি বাংলাদেশের মানুষের যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিষয়টি আমাদের ব্যথিত করে। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সীমান্তে হত্যা বন্ধের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দীর্ঘদিন থেকে সামনে আসছে। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরেও এ বিষয়ে স্পষ্ট আলাপ-আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তবু এ বিষয়ে চূড়ান্ত সমাধানের কোনো লক্ষণ দৃশ্যমান নয়।
দুই দেশের সম্পর্ক নানা দিক থেকে বেশ উষ্ণ এবং ইতিবাচক। ফলে আমাদের মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে ইতিবাচক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও এমন হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি কি সমাধানযোগ্য নয়? ২০১৮ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সীমান্ত সম্মেলনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ভারত। ওই বছর সীমান্তে হত্যা একবারে বন্ধ হয়নি, তবে উল্লেখযোগ্য হারে কমে ১৪ জনে নেমে এসেছিল। গত এক দশকের মধ্যে এই পরিসংখ্যানটিই সবচেয়ে কম।
সামান্য অজুহাতে কিংবা বিনা কারণে বাংলাদেশের নিরীহ ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের প্রাণ হারাতে হচ্ছে, যা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের গায়ে কালি লেপনের শামিল। উভয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধের সমঝোতা বারবার হলেও ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটছে কেন?