কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

খাদ্য নিরাপত্তা ও মুদ্রাস্ফীতি

দেশ রূপান্তর বদরুল হাসান প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৩৩

সাম্প্রতিক কালে বিশ্ব উপর্যুপরি সংকট মোকাবিলায় খাবি খাচ্ছে। প্রথমে চলল কভিড-১৯ অতিমারী। সেটা শেষ হতে না হতেই শুরু হলো মুদ্রাস্ফীতির অশ্বমেধযজ্ঞ। মার্কিন মুলুকে এটা এখন ৮.৫ শতাংশ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ৯.০১ শতাংশের ঘর অতিক্রম করেছে। সব দেশে এখন চলছে এর আগ্রাসন। সম্প্রতি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা থেকে প্রকাশিত চলতি বছরের আগস্ট মাসের খাদ্যশস্যের মূল্য সূচক ২ পয়েন্ট কমলেও বৈশ্বিক বাজারে গমের মূল্য এক বছর আগের মূল্যের চেয়ে ১০.৬ শতাংশ বেশি রয়েছে। বিশ্বব্যাংক তাদের চলতি বছরের এপ্রিল মাসের পণ্য বাজার আউটলুকে মন্তব্য করেছে যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক বাণিজ্য, উৎপাদন ও ভোগের ধারা এমনভাবে পরিবর্তন করে ফেলেছে যে, তাতে  দ্রব্যমূল্যের উচ্চ স্তর অন্তত ২০২৪ সালের শেষ অবধি বজায় থাকবে।


জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এক প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, বর্তমান সংকটের কারণে বিশ্বের অন্তত ২৩ দেশ ৩৩ জাতীয় খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে; অন্তত ৭টি দেশ ১১ ধরনের পণ্যের রপ্তানি সীমিতকরণ করে ফেলেছে। বিশ্বে ২০২১ সালে ৮২৮ মিলিয়ন মানুষ কোনো না কোনো ভাবে ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় খাদ্য-অনিরাপদ মানুষের সংখ্যা ৪৬ মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের সর্বশেষ সময়সীমা ২০৩০ সাল; হাতে সময় আছে মাত্র ৮ বছর। এই সময়সীমার মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২, অর্থাৎ শূন্য ক্ষুধার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রয়োজন আক্রমণাত্মক কর্মসূচি। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সে ধরনের কোনো কিছু তো হচ্ছেই না, বরং ঘটনা ঘটছে সম্পূর্ণ বিপরীত;  লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতিতে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় নতুন করে ভুখানাঙ্গাদের তালিকা স্ফীত হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শূন্য ক্ষুধার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সর্ব শেষ সময় ২০৩০ সালেও বিশ্বে ৬৭০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টির বোঝা বহন করে বেড়াবে। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের অবস্থা কী?


কয়েক দিন আগে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিলম্বিত জনশুমারি ও খানা গণনা শেষ হলো। সমস্যা হলো দীর্ঘদিন ধরে খানা আয়-ব্যয় জরিপ (Household Income and Expenditure Survey, HIES) না হওয়ায় দেশে দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষের সরকারি হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বেসরকারি থিংকট্যাংক সিপিডি, পিপিআরসি, সানেমের মতে দরিদ্র মানুষের হার এখন ৪২ শতাংশ; আর হতদরিদ্রের হার বেড়ে হয়ে গেছে ২৮.৫ শতাংশ; অর্থাৎ সংখ্যার হিসাবে ৫ কোটি। The State of Food Security and Nutrition in the World report (SOFI) ২০২২ থেকে দেখলাম যে, ২০১৯-২১ সালে দেশে অপুষ্টির শিকার মানুষের সংখ্যা ছিল ১৮.৮ মিলিয়ন। আর এ সময় চরম ভাবে খাদ্য-অনিরাপদ মানুষের সংখ্যা ছিল ১৭.৫ মিলিয়ন। দেশে মাঝারি পর্যায়ের খাদ্য-অনিরাপদ মানুষের সংখ্যা ২০১৪-১৬ সালে ছিল ৫০.৪ মিলিয়ন, কিন্তু ২০১৯-২০ সময়ে তাদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২.৩ মিলিয়নে। ২০২০ সালে নিজেদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার সংগ্রহে অসমর্থ মানুষের সংখ্যা ছিল ১২১.১ মিলিয়ন। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতিতে এই সব মানুষের জীবনমান কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।


দেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ীই  মে/২০২২ মাসে মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, জুন মাসে তা উঠে যায় ৭.৫৬ শতাংশে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় যথাক্রমে ৮.৩০ ও ৮.৩৮ শতাংশ। দুঃখের বিষয় হলো শহরের চেয়ে গ্রামে মুদ্রাস্ফীতির হার এখন বেশি; জুনে শহরে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬.৬২ শতাংশ, আর গ্রামাঞ্চলে ৮.০৯ শতাংশ। জুলাই/২০২২ মাসে অবশ্য কিছুটা নিচে নেমে এটার শতাংশ দাঁড়ায় ৭.৪৮। সামনের অবস্থাও যে সহসা ভালো হবে, তারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও