ঠেকে শেখা কেন শেষ হয় না
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় প্রথমেই উল্লেখ রয়েছে যে জনগণের কথা, যারা সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করেছে, সেই আমজনতার রাজনৈতিক অর্থনীতিতে যখনই অঘটন কোনো কিছু ঘটে তখনই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাৎক্ষণিক তাদের মাথায়, মনে ও মুখে সান্ত¡না ও প্রবোধ জাগে দৈবপাকে ঠেকে যা শিখলাম তা আর কখনো ঘটবে না ভবিষ্যতে। ইদানীং কেন জানি তাদের মনে প্রশ্ন জাগে এই ঠেকে শেখার কি কোনো শেষ নেই? ঠেকে শিখতে শিখতে তাদের প্রজন্ম শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত এবং তার পরের প্রজন্মের মধ্যেও এই ঠেকে শেখার কার্যক্রম এডিপিতে বরাদ্দ না থাকলেও চলতে থাকবে বলে তাদের ধারণা।
সেই আদি পিতা হযরত আদম ইবলিশ শয়তানের প্ররোচনায় নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করেছিলেন। প্রভু নিরঞ্জনের নির্দেশ উপদেশ উপেক্ষা করে সম্পাদিত সেই ভুলের খেসারত হিসেবে স্বর্গ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল প্রথম মানব-মানবীকে। অনেকেরই ধারণা এমনতর অসতর্ক না হলে, সিদ্ধান্ত নিতে ভুল না করলে, এমন নির্দেশ অমান্যের ঘটনা না ঘটলে আজ সবাই স্বর্গে স্থায়ীভাবে বিনা দলাদলিতে বিনা সংকট সন্ত্রাসে সংশয়ে বাস করা যেত। যাহোক আদি মানবের করা প্রথম নির্দেশ অমান্যের ঘটনা থেকে আজ পর্যন্ত সারা বিশ্বে যত অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, অন্তর্ঘাত, অপশাসন, আইনের বরখেলাপ, চোরাগোপ্তা হামলা, ডাকাতি, পুকুর এবং সাগর চুরি, প্রবঞ্চনা-প্রতারণা, ডলারের (কৃত্রিম) সংকট, দুর্নীতি দুঃশাসন স্বৈরাচার সব কিছুর সালতামামি ও শুমার করলে তার সারমর্ম দাঁড়ায় অনেকেরই বা অধিকাংশেরই ‘ঠেকে শেখা শেষ হয়নি’, অর্থাৎ তারা উপযুক্ত শিক্ষা পাননি।