প্রধানমন্ত্রীর চা, বিএনপি খাবে না?
দাবি আদায়ে বিএনপি যদি কার্যালয় ঘেরাও করতে চায়, তাহলে তাদের চা খাওয়ানোর কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিলে চা পানে তাদের আপত্তি নেই। তার মানে বিএনপি চায়ের দাওয়াত গ্রহণ করবে কি না, সেটি শর্তসাপেক্ষ এবং শর্তটি অত্যন্ত কঠিন। অন্তত বিদ্যমান সংবিধানের আলোকে। তাহলে কি কেটলিতে চায়ের পানি ফুটবে না?
রাজনীতি ও ভোটের মাঠে, বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারে চায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোকেও চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে চা চক্র শেষে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যাদের সঙ্গে পরিচয় ছিল তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করে নিতে এই চা চক্র বড় ভূমিকা পালন করবে। এটিকে ভবিষ্যতে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তখন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছিলেন, এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো। আমরাও প্রধানমন্ত্রীকে একটা রিসোর্টে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছি, যেখানে তার নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হবে না। যদিও জাতীয় পার্টির আয়োজনে কোনো রিসোর্টে প্রধানমন্ত্রী চা খেতে গিয়েছিলেন, এমন তথ্য নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, 'আমরা শুধু চা-চক্রই করিনি, এখানে আমরা রাজনৈতিক ও বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময়ও করেছি। আমাদের আতিথেয়তার ঘাটতি থাকলে সেটা আমরা হৃদয়ের উষ্ণতা দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করেছি।'
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকেও ওই চা চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা অংশ নেয়নি। অবশ্য চিঠি দিয়ে তারা চায়ের আমন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিল।
এবারও প্রধানমন্ত্রীর এই চায়ের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে বিএনপি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শর্ত দিয়েছে। দলের মহাসচিব বলেছেন, চা খাওয়ার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নেওয়ার কথা বলুন।
বিএনপি তথা সরকারবিরোধী সবগুলো দলের এ মুহূর্তে প্রধান দাবি হচ্ছে নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার, যার প্রধান হবেন শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ। যদিও সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পরে সেই সুযোগ অন্তত সাংবিধানিকভাবে নেই।