স্বাস্থ্যের অভিযান থেকে কী অর্জিত হলো?
গত ২৬ মে স্বাস্থ্য অধিদফতর অনিবন্ধিত-অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিল। নির্দেশনা জারির পর পরবর্তী তিন দিনব্যাপী অভিযানে আট বিভাগে মোট ১ হাজার ১৪৯টি বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মহোদয় জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতেই অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর এই অভিযান অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
দেশে নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১০ হাজার ৮৯৩। অনিবন্ধিত কতো আছে তার হিসাব স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে নেই। ধারণা করা হয়, অনুমোদনহীন-অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা নিবন্ধিত সংখ্যার চেয়েও অধিক। এবার শুধু নিবন্ধন না থাকার সুনির্দিষ্ট শর্তকে ধরে অভিযানে নামা হয়েছে।
এসব নিবন্ধনহীন এবং অনেক নিবন্ধিত বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বাসাবাড়ির কোনও ফ্ল্যাট, এমনকি দোকানে, এক রুমের ঘর ভাড়া নিয়ে অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে হাসপাতাল, অপারেশন থিয়েটার, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। অবৈধ ক্লিনিকে ভুয়া চিকিৎসক, অনভিজ্ঞ নার্স, অদক্ষ আয়া দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। বিশেষজ্ঞ ছাড়া, নিম্নমানের যন্ত্রপাতি, মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট, অদক্ষ টেকনিশিয়ান দিয়ে রোগ পরীক্ষা করা হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ভুল রিপোর্টের কারণে রোগীর ভুল চিকিৎসা হচ্ছে। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগও উঠছে। চিকিৎসা হোক বা না হোক, এসব হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসা ও অপারেশনের নামে রোগীদের পকেট থেকে হাজার হাজার টাকা খসানো হয়। মানহীন এসব ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীরা অনিরাপদ ও সাধারণ মানুষ চিকিৎসার নামে প্রতারিত হচ্ছে।