কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রিজার্ভ বাঁচাতে টাকায় বৈশ্বিক লেনদেন নিয়ে ভাবা উচিত

কালের কণ্ঠ আবু আহমেদ প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২২, ০৯:২৩

চারদিকের অবস্থা ভালো না। সারা বিশ্বেই অর্থনীতি খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। লোকসংখ্যা অনেক বেশি। এখানে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সহজেই মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এ জন্য সময় থাকতে আমাদের কোমর শক্তভাবে বাঁধতে হবে। অর্থাৎ খরচ কমানোয় সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। আমাদের ভাবতে হবে, সাম্প্রতিককালে আমাদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও আমদানি ব্যয় অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসছে। একসময় শ্রীলঙ্কার ভালো রিজার্ভ ছিল। সেটা শেষ হতে এক বছরের বেশি সময় লাগেনি। তাই আমাদেরও খুব চিন্তা-ভাবনা করে ব্যয় করতে হবে। যে ব্যয়টা না করলেই নয়, শুধু সেটাই করতে হবে।


এখন সময়টা হচ্ছে টিকে থাকার। আমাদের টিকে থাকতে হবে এবং টিকে থাকার প্রক্রিয়ার মধ্যে দরিদ্র লোকদেরও রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে যা যা করা উচিত, তার মধ্যে কিছু পদক্ষেপ সরকার এরই মধ্যে গ্রহণ করেছে। যেমন—আমদানি নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসনিক ব্যয় নিয়ন্ত্রণ—এগুলো যথাসময়েই নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যয় নিয়েও ভাবা দরকার। এসব খাতে বরাদ্দের ব্যাপারে আরো কঠোর হওয়া উচিত এবং জবাবদিহিমূলক পদ্ধতি দাঁড় করানো উচিত। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ভ্রমণের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা দরকার। বিশেষ করে সংকট না কাটা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন বছরে একবারের বেশি বিদেশে যেতে না পারেন, সে ব্যবস্থা করা উচিত। কারণ ডলারের চাহিদা বাড়ার পেছনে ব্যক্তিগত বিদেশ ভ্রমণ বড় ভূমিকা রাখে।


এসব পদক্ষেপের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হতে পারে বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেনে ডলারের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে টাকার ব্যবহার শুরু করা। আমাদের যেসব শক্তিশালী বন্ধু রাষ্ট্র রয়েছে, যাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশি, তাদের দিয়ে কাজটা শুরু করা যেতে পারে। যেমন—ভারত একটি। এরই মধ্যে ভারত এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে। তারা বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেনে কিছু পরিমাণে রুপির ব্যবহার করছে। যেমন—রাশিয়া-ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনে রুবল ও রুপির হিসাব খোলা হয়েছে এবং তারা রাশিয়াকে রুপিতে অর্থ পরিশোধ করছে। আবার রাশিয়াও ভারতকে রুবলে অর্থ পরিশোধ করছে। শুধু রাশিয়া নয়, যাদের সঙ্গে ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তাদের সঙ্গেও ভারত কিছু পরিমাণে রুপিতে অর্থ পরিশোধের পথে হাঁটছে।


এ কাজটি বাংলাদেশেরও করা উচিত। অর্থাৎ আমরা ভারতীয় রুপি গ্রহণ করব আমাদের রপ্তানির বিপরীতে এবং তারা আমাদের টাকা গ্রহণ করবে তাদের রপ্তানির বিপরীতে। ভারত আমাদের কাছ থেকে যা ক্রয় করে, তার চেয়ে সাত থেকে আট গুণ বেশি আমরা তাদের কাছ থেকে ক্রয় করি। আমি বলছি না যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের পুরোটাই টাকা-রুপিতে লেনদেন করতে হবে। আমার পরামর্শ হচ্ছে, একটা মাত্রা পর্যন্ত বাংলাদেশি টাকা যাতে তারা পেমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করে। আমরা যদি ভারতের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে টাকা-রুপি ব্যবস্থাটি চালু করতে পারি, তাহলে ডলারের ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমবে। এটাই আসল কথা। এটা সুসম্পর্কের ওপর ভিত্তি করেই সম্ভব। এর মধ্য দিয়ে আরেকটি জিনিস ঘটবে। তাতে টাকার চাহিদা সৃষ্টি হবে এবং টাকার মান বাড়বে। আর ডলারের ওপর চাপটাও কমে আসবে।


একই প্রচেষ্টা চালানো যেতে পারে চীনের সঙ্গেও, যাতে দুই দেশের বাণিজ্যের একটা অংশ ইউয়ান-টাকায় লেনদেন হবে। পাকিস্তানের সঙ্গেও রুপি ও টাকায় লেনদেনের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। তাদেরও একই সমস্যা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেই। আমাদের একই সমস্যা, রিজার্ভ কমে আসছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ভারত ও চীনের সঙ্গে শুরু করতে পারে। এরপর যাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব সুদৃঢ়, তাদের সঙ্গে এটা শুরু করব। এই উদ্যোগে ইরানকেও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে; যদিও দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই মুহূর্তে ইরানের সঙ্গে ভারতের যে বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে তা ডলারভিত্তিক নয়। সেটা হচ্ছে ডুয়াল কারেন্সি বা ইরানির রিয়াল ও ভারতীয় রুপি বিনিময়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও