কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ ফিরে আসুক

যুগান্তর একেএম শাহনাওয়াজ প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১০:৩৪

আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক অর্থে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে সাধ্যমতো ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবাসিক হল থাকছে। সময়ের চাহিদায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পাল্লা দিয়ে হলগুলো সব শিক্ষার্থীকে ধারণ করতে না পারলেও প্রত্যেক শিক্ষার্থী কোনো না কোনো হলের সঙ্গেই সংযুক্ত থাকে। তাদের অর্জিত ডিগ্রির সনদে থাকে হলের পরিচিতি। অর্থাৎ ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন হলের আবাসিক ছাত্রছাত্রী ছিলেন এর উল্লেখ থাকে সনদে।


তাই স্বর্ণালি যুগে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের পাশাপাশি নির্বাচিত হল সংসদও গঠিত হতো। হল পরিচালনায় এ হল সংসদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেত হল প্রশাসন। হল সংসদ দলমতনির্বিশেষে সব আবাসিক শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করত। তাই শিক্ষার্থীদের ভরসার স্থল ছিল হল সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রনেতারা। হলের আবাসিক ও অনাবাসিক ছাত্ররা নিজেদের আপন মনে করত হলগুলোকে। অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ্যতায় এগিয়ে থাকার একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রতিযোগিতাও ছিল। হল সংসদের তত্ত্বাবধানে বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আন্তঃহল বিতর্ক, নাট্য ও নানা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা লেগেই থাকত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা বিকাশের সূতিকাগার ছিল হলগুলো।


এসব এখন শুধু স্মৃতি হয়ে রয়েছে। এখন হল মানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রছাত্রী নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান। হল পরিচালনায় হল প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ যেন! এখানে ক্ষমতার রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ছাত্ররা সামন্ত প্রভুর ভূমিকায় থাকে। অন্যসব আবাসিক শিক্ষার্থী অনেকটা তাদের আজ্ঞাবহ দাস। প্রভুত্ব বজায় রাখতে মাঝেমধ্যে নিবর্তনমূলক আচরণ নেমে আসে সতীর্থ শিক্ষার্থীর ওপর। এ কারণে এখন প্রত্যেক হলেই অলিখিত নাম হয়ে গেছে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীর কক্ষ’, আর ‘রাজনৈতিক কক্ষ’। রাজনৈতিক কক্ষের দাপুটে নেতাকর্মীদের অনুমোদন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিশেষ কিছু করার বা বলার সাধ্য সাধারণত থাকে না। সবচেয়ে দুর্ভাগ্য এই হল প্রশাসনে যুক্ত শিক্ষকরাও আজকাল নাকি রাজনৈতিক কক্ষের নেতাদের ঘাঁটায় না। ওদের ইচ্ছাকেই নীরবে মেনে নেয়। যেহেতু ক্ষমতাসীন সরকারের অনুগত রাজনৈতিক দলের ছাত্ররা হলে ক্ষমতাবান থাকে এবং সাধারণত একই রাজনৈতিক দলসমর্থিত শিক্ষকরা প্রায়ই হল পরিচালনার দায়িত্ব পান, তাই উভয় পক্ষের মধ্যে একটি আপস রফা হয়ে যায়।


এসবের কুপ্রভাবে এখন হল ঘিরে তেমনভাবে সুস্থ সংস্কৃতিরচর্চা হয় না। হলে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আন্তঃহল প্রতিযোগিতা এসব অনেকটা অচেনা হয়ে যাচ্ছে। এখন শোনা যায়, দলীয় ছাত্রদের মিছিলে যেতে বাধ্য করা হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের। ক্লাস-পরীক্ষার দোহাইও মানা হয় না। আর এমন অধঃপতনের সব দায়ই বর্তায় আমাদের জাতীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রকদের ওপর। বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলে অবস্থানের কারণে কাছে থেকে দেখি এসব জাতীয় নেতা-নেত্রী নিজেদের ক্ষমতায় থাকা ও যাওয়ার পথ কুসুমাস্তীর্ণ করতে ক্যাম্পাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে চতুর আচরণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে যে তরুণদের সোনালি স্বপ্ন বোনার কথা, নিজেদের চৌকশ করার জন্য মেধা শানিত করার কথা, সেখানে নেতারা এদের অস্ত্রবাজ-চাঁদাবাজ আর সন্ত্রাসী হিসাবে গড়ে তোলার পথ করে দিচ্ছেন। আর ক্ষমতার সুখ সুবিধায় বসে এসব জাতীয় নেতা যখন বড় বড় কথা বলেন, হেদায়েতের বাণী শোনান, তখন ভীষণ কপট মনে হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও