শেষ বলে মিডল স্টাম্পেই বোল্ড হলেন ইমরান নিয়াজি
একটি প্রমাণিত কথা হলো, ইতিহাস নিজ থেকেই পুনরাবৃত্তি ঘটায়। পাকিস্তানে ইমরান খান নিয়াজির পতন সেটি আবার প্রমাণ করল। যে পথে তিনি এসেছিলেন, সেই পথেই তাঁর প্রস্থান। তবে তিনি আরেকটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলেন, পাকিস্তানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সংসদে অনাস্থার মাধ্যমে বিতাড়িত হয়ে মারাত্মকভাবে লজ্জিতও হলেন।
পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান থেকে শুরু করে কোনো প্রধানমন্ত্রীই সংবিধান দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্বকাল শেষ করতে পারেননি। ইমরান নিয়াজির ক্ষেত্রেও সেই ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা রক্ষিত হলো, নতুন সংযোজন দিয়ে।
পাকিস্তানে কেন এমনটি হচ্ছে, সেই প্রশ্নের জবাব খোঁজার জন্য পাকিস্তান সৃষ্টির ইতিহাসে নজর দিতে হয়। এর সৃষ্টিই হয়েছিল এক অস্বাভাবিক, ষড়যন্ত্রমূলক পদ্ধতি অনুসরণ করে। দ্বিজাতিতত্ত্ব নামে এক দুষ্ট নীতি অনুসরণ করেছিলেন পাকিস্তানের স্রষ্টা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, বহুকাল আগে স্যার সৈয়দ আহম্মদ আবিষ্কৃত তত্ত্ব দিয়ে, যাতে বলা হয়েছিল, হিন্দু-মুসলমান দুটি ভিন্ন জাতি। স্যার সৈয়দ এটি করেছিলেন তাঁর ইংরেজ প্রভুদের তুষ্ট করার জন্য, যার বিনিময়ে তিনি ‘স্যার’ উপাধি ছাড়াও বহু উপঢৌকন পেয়েছিলেন। স্যার সৈয়দ সম্ভবত ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছিলেন, কিন্তু জিন্নাহ সাহেব ছিলেন তার বিপরীত, ধর্মের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্কই ছিল না, তিনি নামাজ পড়তে পারতেন না বলে কয়েক বছর বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলেন। কিন্তু একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার লালসাই তাঁকে প্রলুব্ধ করেছিল তথাকথিত দ্বিজাতিতত্ত্বের ওপর ভর করতে। শুধু তা-ই নয়, যে বঙ্গ প্রদেশের ভোট পেয়েই মুসলিম লীগ ১৯৪৬-এর নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল, পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই তিনি বাংলার আসল নেতা, যেমন সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম প্রমুখের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, অবাঙালি খাজা নাজিমুদ্দীন গংয়ের সঙ্গে চক্রান্তের বেড়াজাল তৈরি করেন।