রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ নয়

ডেইলি স্টার সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২২, ১৩:৩৯

এটা উৎসাহব্যঞ্জক যে, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুর্নীতি ও অনিয়মের দিকে ইঙ্গিত করে এসব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য তারা সরকারকে দোষারোপ করেন। একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দাবিও তারা করেছেন। সেটি হলো—রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া উচিত নয়। এর পরিবর্তে, সংসদ সদস্যরা শিক্ষার সামগ্রিক মান উন্নয়নের জন্য সত্যিকারের শিক্ষাবিদদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।


আমরা বিশ্বাস করি যে আইন প্রণেতাদের এই দাবি সাধারণ জনগণের অনুভূতিরই প্রতিফলন। সাধারণ মানুষ তাদের সন্তানদের সৎ ও যোগ্য শিক্ষকের কাছ থেকে আলোকিত করে তোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। গত কয়েক দশকে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি এবং উপাচার্য নিয়োগে বিতর্কিত প্রক্রিয়ার কারণে সুনাম হারিয়েছে।


আপাতদৃষ্টিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য আমাদের কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। নিয়ম না থাকায় ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্য বা তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকার বিষয়টিই এই শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রধান যোগ্যতা হয়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ জন উপাচার্যের মধ্যে অন্তত ৩৯ জন তাদের কর্মজীবনে সরকারপন্থী বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যদি কোনো উপাচার্য পদপ্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের হয়ে থাকেন, তাহলে তার নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। দৃশ্যত আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক উপাচার্য এসেছে এই নীল দল থেকেই।


স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিযুক্ত এই উপাচার্যরা কি নিরপেক্ষভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক কল্যাণে ভূমিকা পালন করতে পারেন? উত্তর হচ্ছে, না। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এই উত্তরের পক্ষে বেশ স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে।


এই প্রেক্ষাপটে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিবেশ ও উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়ন করতে চাইলে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই বিশিষ্ট ও সৎ শিক্ষাবিদদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, সৎ ব্যক্তিত্বরা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিতে চান না। সৎ ব্যক্তিত্বরা এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থার অংশ হতে আগ্রহী হবেন না, এটাই স্বাভাবিক। কাজেই সরকারকে সংসদ সদস্যদের দাবি ও পরামর্শগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে সৎ শিক্ষাবিদরা উপাচার্য হতে উৎসাহিত হবেন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করবেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও