মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ইউক্রেন ইস্যুর ‘ব্যবহার’ ফল দেবে কি?
বাংলাদেশ কি দীর্ঘদিনের অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসছে? বরাবরই জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে দুর্বল দেশগুলোর পক্ষাবলম্বন করেছে। বিভিন্ন আগ্রাসন ও দখলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যুদ্ধবিরোধী নীতি আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন নিয়ে সাধারণ পরিষদের ভোটে বাংলাদেশ ভোটদানে বিরত ছিল। কার্যত, বাংলাদেশ রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
গত বছরও রোহিঙ্গা প্রশ্নে মিয়ানমারের বিপক্ষে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ। ওই সময় চীন, রাশিয়া, ভারতসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশই মিয়ানমারের বিপক্ষে ভোট দেয়নি। বাংলাদেশ কেন যুদ্ধ বা সামরিক জান্তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছে না? কী কারণে দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এল।
এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে নানা ধরনের বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আপাতত ইউক্রেন সংকট নিয়েই আলোচনা করা যাক। সরকারের তরফ থেকে বোঝানো হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন বা রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাতে বাংলাদেশ জড়াতে চাইছে না। নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে নিজের পররাষ্ট্রনীতিকে পরিচালিত করতে চাইছে। ইউক্রেন সংকটে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষি করছে। সম্ভবত বাংলাদেশও এই সুযোগ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষির একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
বার্তাটি হচ্ছে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে র্যাব ও সাত সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা। গত বছর ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর সরকার নানাভাবেই চেষ্টা করেছে। লবিস্ট প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ করেছিল। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি প্যারিসের ইন্দো-প্যাসিফিক জোটের বৈঠকে উপস্থিতি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। মাঝের এই সময়ে তিনি ইউরোপ থেকে নিউইয়র্ক চষে বেড়িয়েছেন। তবে এতে যে কোনো সুবিধা হয়নি, তা বোঝায় যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন