আমলাদের কি অধিকার আছে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের যোগ্য ব্যক্তি ঠিক করার
তীব্র সমালোচনার পর সরকার আমির হামজাকে দেওয়া সাহিত্যের স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিল করেছে। দুই বছর আগে এই সাহিত্যের স্বাধীনতা পুরস্কার একজনকে দেওয়ার পর সমালোচনার মুখে বাতিল করেছিল সরকার। একটি জাতীয় পুরস্কার নিয়ে এমন আচরণকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন: আবার প্রমাণিত হলো, যাঁরা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেন তাঁরা কতটা অজ্ঞ, কতটা অবিবেচক। এ ঘটনা আমাকে ক্ষুব্ধ করেছে, ব্যথিত করেছে। আরও কষ্ট লেগেছে এ জন্য যে এখন রাষ্ট্রশাসনে আছে আওয়ামী লীগ। যে দলটির একটি সুমহান ঐতিহ্য আছে। দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতির রক্ষায় এই দল লড়াই–সংগ্রাম করেছে।
পুরস্কার এখন যে প্রক্রিয়ায় দেওয়া হয়, তা নিয়ে অনেক দিন থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। এর পরিবর্তন নিয়ে আপনি আগেও বলেছেন। কিন্তু কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ছে না।
অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন: মনে রাখতে হবে, পুরস্কারটি চালু করা হয়েছিল সামরিক সরকারের আমলে। সেই আমলের ধারাবাহিকতা আমরা বহন করে চলেছি। সামরিক সরকার যেমন করে আমলানির্ভর ছিল, পুরস্কারের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সেটা তারা বজায় রেখেছে। পুরো প্রক্রিয়া একজন ব্যক্তির জন্য মর্যাদাহানিকর। এখানে একটি ফরম দিয়ে সেখানে বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষের বর্ণনা দিতে হয়। আর এখানে কে যোগ্য, তা নির্ধারণ করেন আমলারা। আমলাদের কি অধিকার আছে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের যোগ্য ব্যক্তি ঠিক করার? আর এত করে যে বংশপরিচয় বিচার করা হয়, তারপর এমন ভুল হয় কীভাবে? এসব কোনো ভুল নয়, পুরোটাই আমলাতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারিতার ফল। আর আমলাদের এসব তালিকা বাছবিচারহীনভাবে মন্ত্রীরা মেনে নিচ্ছেন। এটা লজ্জার কথা।