ভারতকে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে এগোতে হবে
এখন আমরা সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে চলেছি, সেটা হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে কি হবে না! রাশিয়া আর ইউক্রেনের লড়াই নানাভাবে থামানোর চেষ্টা চলছে, কিন্তু থামে না। সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে অথচ সেটা পালিত হচ্ছে না। এক বিচিত্র পরিস্থিতি।
একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে লড়ছে।
অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। বিধ্বস্ত হচ্ছে ইউক্রেন। কত মানুষ মারা যাচ্ছে। আর এমন একটা পরিস্থিতিতে এই উপমহাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি, সেখানে ভারত এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের বিরোধিতা করছে না। ইউক্রেনকে আক্রমণ করাটা সঠিক সিদ্ধান্ত বলছে না। কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে গিয়ে আমেরিকার অঙ্গুলি হেলনে ভোটও দিচ্ছে না। অর্থাত্ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছে না।
এর কারণ একটাই। সেটা হলো, রাশিয়া ও চীনের একটা অক্ষ তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়া ঘুরে এলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রথমে চীনে গেলেন। এরপর চীন থেকে চলে গেলেন রাশিয়ায়। এই যে পাকিস্তান ও চীন অক্ষ এবং রাশিয়ার সঙ্গে আজকে যে বন্ধুত্ব সেই পরিপ্রেক্ষিতে চীনের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাওয়া কি ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কর্তব্য? বরং এখন একটা জিনিস লক্ষ করা যাচ্ছে যে চীনও যুদ্ধের উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করছে। সেই উত্তাপ কমিয়ে ভারতের সঙ্গে একটা দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সত্যি কথা বলতে কী, সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। সেটা চালু হচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না সন্ত্রাস বন্ধ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব না—এ রকম একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে ভারত।
কিন্তু চীনের সঙ্গে তা নয়। চীনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাটা আমরা আবার নতুন উদ্যোগে শুরু করেছি। একদিকে যেমন চীনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হচ্ছে, পাশাপাশি আবার চীনকে সম্পূর্ণ বিশ্বাসও করছি না। কোয়াড্রাল বৈঠকে এখন মরিশাসও যুক্ত হওয়ায় দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের যে উদ্যোগ তা মোকাবেলা করার জন্য জাপান থেকে শুরু করে মরিশাস এবং দূর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা সমর্থন রয়েছে। সুতরাং পররাষ্ট্রনীতিটা এক স্তরের নয়, এক মাত্রারও নয়। অনেক মাত্রা ও স্তর এতে থাকে। অর্থাত্ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একই সঙ্গে ১০টা জিনিস করে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বাংলাদেশ-ভারত
- যৌথ উদ্যোগ
- ইউক্রেন সংকট