শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক দরপতনের নেপথ্যে
সম্প্রতি শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা গেছে। গত ৭ মার্চ এক দিনেই দরপতন হয়েছে ২.৭৪ শতাংশ। গত এক বছরে এটাই সর্বোচ্চ দরপতন। এটি হঠাৎ করে ঘটেনি।
আগে থেকেই আমাদের শেয়ারবাজার দুর্বল হয়ে আসছিল। সূচক সাত হাজারের অনেক ওপরে উঠে গিয়েছিল। অথচ সূচক যখন ছয় হাজার ৫০০ অতিক্রম করে, তখনই আমি সতর্ক করেছিলাম। অনেক বিশেষজ্ঞ এটাকে মাত্রাতিরিক্ত বলে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও অনেক বিনিয়োগকারী এই সতর্কতা পছন্দ করেননি। তাঁরা মনে করছিলেন, এই সমালোচনার কারণে শেয়ারবাজারটা থেমে যেতে পারে এবং তাতে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এটা বলা যে শেয়ারবাজার যদি তার মৌলিকত্ব থেকে দূরে সরে যায়, তখন সে বাজার টেকে না। শেয়ারবাজার অতিমূল্যায়িত হলে ক্ষতিই বেশি হয়।
এই সতর্কবার্তা বিনিয়োগকারীদের পছন্দ না হওয়ার কারণ হলো, তাঁরা অল্প সময়ের মধ্যেই ধনী হতে চান। তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে দুই-তিন মাসের মধ্যেই এটাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে নিতে চান। অনেক ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতেও দেখা গেছে। অল্প সময়েই কোনো কোনো শেয়ারের দাম দুই-তিন গুণ হয়ে গেছে। যেমন—একটা জুতা কম্পানির শেয়ার ছিল মাত্র ১৭ টাকা। সেটা হয়ে গেছে ১৪০ টাকা। বেশি সময় লাগেনি তাতে। গত ছয় মাসের মধ্যেই এটা হয়েছে। এটা এখনো ১২২ টাকায় আছে। এভাবে অনেক কম্পানির কারখানা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও তাদের শেয়ার দ্বিগুণ হয়েছে, কারো তিন গুণও হয়েছে। বীমা কম্পানির শেয়ার যখন হু হু করে বাড়ছিল, আমি তখন বলেছিলাম, এর দাম তাদের ‘আর্নিং পার শেয়ার’ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। কিন্তু অনেককেই যুক্তি দিতে দেখা গেল যে বীমা খাতে নতুন নতুন ব্যবসা আসছে এবং নতুন রেগুলেশন পক্ষে আসছে, সুতরাং বীমার দাম বাড়াই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি।