সার্চে আমলা: সদরে নিন্দা অন্দরে জিন্দা
কারণে-অকারণে কথায় কথায় আমলাদের গালমন্দের সমান্তরালে তাদের তোষণ-পোষণের নিষ্ঠুর সত্যতা নির্বাচন কমিশন নিয়োগের তল্লাশিতেও। সার্চ কমিটিতে ডজনে ডজনে নাম তাদের। সব নাম কি তারা নিজেরা দিয়েছেন? মোটেই না। সার্চ কমিটিতে আমলাদের হয়ে যাদের নাম সরবরাহের কথা তারাই দিয়েছেন।
সেই প্রস্তাবকদের নাম প্রকাশ হয়নি। সার্চ কমিটির সিদ্ধান্তই ছিল প্রস্তাবিত নাম জানানো হবে, প্রস্তাবকের নাম জানানো হবে না। সামাজিক গণমাধ্যমসহ তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের জানার সুযোগ বেড়েছে। কেউ কিছু না বললেও না বলা কথাগুলো কোনো না কোনো ভাবে বলা হয়ে যায়। জানা হয়ে যায় না বলা কথাগুলো।
আমলাদের নিন্দাবাদ করা কারও কারও কাছে ফ্যাশনের মতো। প্রসঙ্গ ছাড়াও তারা আমলাদের দোষেন। রাজনীতি ও গণতন্ত্রের সর্বনাশের গোড়া বলে চিহ্ন দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাদের। এমন ব্যক্তি ও দলের দেওয়া তালিকায়ও আমলাদের জিন্দাবাদের নমুনা। কেন এ স্ববিরোধিতা? নাকি এটাও ফ্যাশন? ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নসহ কয়েক নেতা মাঝে মধ্যেই আমলাদের একটু বেশি বেশি তুলাধুনা করেন। তীব্র ভাষায় ক্ষোভের জানান দেন সরকারের আমলানির্ভরতার। রাজনীতিকদের মর্যাদা কমে যাওয়ার বেদনার কথা জানান। এতে মিডিয়া কাভারেজ ভালো পান। গণমাধ্যম বেশ লুফে নেয় এ ধরনের কথাবার্তা।
এই রাজনীতিকদের বক্তব্যের সারকথা হলো রাজনীতিবিদের এখন আর গুরুত্ব নেই। আমলারাই সব। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে যতো দাপট প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরই। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন আরও আক্রমণাত্মক ভাষায়- মাঠে খেলছেন আমলারা। রাজনীতিবিদরা সাইডলাইনে বসে খেলা দেখছেন। আমলাদের ‘জগৎ শেঠ’ বলে অভিহিত করেছেন দলটির আরেক নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ। ক্ষমতাসীন দলের এক এমপি ক্ষোভ জানাতে গিয়ে বলেছেন, সচিবের পিয়নও এখন তাদের পাত্তা দিতে চায় না।