পাঁচ প্রজন্মের স্মৃতি নিয়ে চলে গেলেন লতা
গানের প্রতি ভালোবাসা আমার ছেলেবেলা থেকেই। গানের প্রতি মানে গান শোনার প্রতি। পরে চেষ্টা করেছি বটে, কিন্তু অল্পতেই বুঝে গেছি আমার গলায় সুর নেই। তবে গান শোনার ভালোবাসাটা কখনো কমেনি। ভালোবাসা থাকলেও ছেলেবেলায় সেই ভালোবাসা মেটানোর সহজ উপায় ছিল না।
সত্তরের দশকে আমাদের গ্রামে কিছুই ছিল না- বিদ্যুৎ ছিল না, টেলিভিশন ছিল না। আমাদের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ছিল ছোট্ট একটা রেডিও। অনুরোধের আসর চাওয়া পাওয়া, আধুনিক গান, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত- শোনা যেতো রেডিওর কল্যাণে।
আমাদের গ্রামের চাচাতো ভাই কাশেম হঠাৎ একদিন একটা ‘চেঞ্জার’ কিনে আনলেন। এখনকার প্রজন্মকে জিনিসটা চেনানোই মুশকিল হবে। এমনিতে বলা হতো ‘টু ইন ওয়ান’, যাতে রেডিওর পাশাপাশি ক্যাসেটেও গান শোনা যেতো। চেঞ্জ করা যেতো বলেই কি গ্রামে এটাকে চেঞ্জার বলতো? আমি ঠিক জানি না।
তারপর দ্রুত চেঞ্জার বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়। গ্রামের অনেকেই কাজের খোঁজে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যেতো। দেশে ফেরার সময় সবাই আর কিছু আনুক আর না আনুক একটা চেঞ্জার অবশ্যই আনতেন। বলছিলাম কাশেম ভাইয়ের চেঞ্জারের কথা। সেই চেঞ্জার চিরদিনের জন্য চেঞ্জ করে দিল আমার গান শোনার স্মৃতি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- স্মরণ
- লতা মুঙ্গেশকর