লবিস্ট বলতে বোঝায় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে, যারা পেশাগতভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বা দেশের পক্ষে ওই প্রতিষ্ঠান বা দেশের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে তুলে ধরে। তারা সরকার ও সাধারণ নাগরিকদের কাছেও বক্তব্য তুলে ধরতে পারে, বিজ্ঞাপন দিতে পারে, জনসংযোগ করতে পারে। তবে তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে আইনপ্রণেতাদের কাছে পৌঁছানো।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, আমি বলছি ফেডারেল সরকারের কথা, তাদের প্রতিনিধি পরিষদের ‘অফিস অব ক্লার্ক’-এ এবং সিনেটের সেক্রেটারির কাছে নিবন্ধিত হতে হয়। আরা যারা বিদেশি কোনো মক্কেলের প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের নিবন্ধিত হতে হয় আইন মন্ত্রণালয় বা ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ডিভিশনে। যে আইনের আওতায় এই নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা আছে, তা হচ্ছে ফরেন এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট বা ফারা। আইনটি চালু হয় ১৯৩৮ সালে। যেটা তারা (লবিস্ট ফার্ম) পারে না সেটা হচ্ছে আর্থিক লেনদেন, তারা কোনো আইনপ্রণেতাকে অর্থ দিতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রে মোট লবিস্টের সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার। এর মধ্যে বিদেশিদের প্রতিনিধিত্ব করে, এমন যারা নিবন্ধিত, তাদের সংখ্যা হচ্ছে ৮৭৫।
বিদেশের হয়ে যারা লবি করে, তাদের তদারকির দায়িত্ব হচ্ছে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের। কিন্তু আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে এদের ওপরে অন্যদেরও নজর থাকে। যেমন ধরুন, ওপেন সিক্রেটস বলে একটি সংগঠন। এরা হচ্ছে সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠান। নজরদারির কারণ এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাদের হয়ে কাজ করছে, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত। এটা বিশেষ করে সেই সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যেখানে কোনো দেশের প্রতিনিধিত্ব করা হয়। তার ওপরে যদি ওই দেশের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপত্তির বিষয় থাকে, তবে তো অবশ্যই তারা নজরে থাকে। এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের সব ধরনের তথ্য জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে দিতে বাধ্য থাকে। আইনে বলা হয়েছে, এমনকি তাদের কাজের ব্যয়ের ফর্দ পর্যন্ত দিতে হবে।
এখানে আরেকটা কথা বলি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হয়ে যারা লবি করে, তারা চাইলে ফারার আওতায় নিবন্ধন না করে অভ্যন্তরীণ লবিবিষয়ক আইনের আওতায় কংগ্রেসে নিবন্ধন করতে পারে। এই আইনের নাম হচ্ছে লবিং ডিসক্লোজার অ্যাক্ট। কিন্তু কেউ যদি বিদেশি সরকার বা রাজনৈতিক দলের হয়ে লবি করে, তবে তাকে ফারার আওতায়ই নিবন্ধন করতে হয়। তা সত্ত্বেও অভিযোগ আছে যে অনেক দেশের পক্ষে লবিস্টরা এভাবে কম নজরদারির সুবিধা নেয়। এ কারণে ফারা আইনের সংস্কার করার চেষ্টা হচ্ছে।