
অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিরাপদ সড়ক জরুরি
সড়ক দুর্ঘনায় প্রতিবছর দেশে গড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যানুসারে ২০২১ সালে সারা দেশে মোট পাঁচ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ছয় হাজার ২৮৪ জন। আর আহত হয়েছেন সাত হাজার ৪৬৮ জন।
এর মধ্যে দুই হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর তাতে নিহত হয়েছে দুই হাজার ২১৪ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহতের ৩৫.২৩ শতাংশ। এ ছাড়া বছরজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫২৩ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৪.২৩ শতাংশ।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা ‘রোড় সেফটি ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে ৭৬টি নৌদুর্ঘটনায় ১৫৯ জন নিহত, ১৯২ জন আহত এবং ৪৭ জন নিখোঁজ হয়েছে। আর ১২৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত এবং ৩৯ জন আহত হয়েছে। দেশে কোনোভাবেই সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো যাচ্ছে না।
ঈদের সময় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। পত্রিকার পাতা খুললে কিংবা টিভি চ্যানেলের সংবাদের দিকে চোখ রাখলে প্রায় প্রতিদিনই চোখে পড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত হওয়ার খবর। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও দুর্ঘটনা রোধে লাগাম টেনে ধরা সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। ফলে প্রায় প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে; পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে হতাহতের ঘটনা। এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিবছর দেশে প্রায় সাড়ে সাত হাজার সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আর এতে প্রায় সমানসংখ্যক মানুষ মারা যায়। দেশে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তাতে দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো দিন দিন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে এখন চলাচল করা মানেই নিজের জীবন বাজি রেখে চলাচল করার শামিল। দেশের সার্বিক সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, ওভারটেকিং করার প্রবল মানসিকতা, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব, জনগণের সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন কিংবা রাস্তায় চলাচলের নিয়ম না মানাকে দুর্ঘটনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- সড়ক দুর্ঘটনা
- দেশের উন্নয়ন