৯০৮ প্রাণহানির ১৪ বছর, শেষ হয়নি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ
সব হারানোর পরও আশা ছিল বেড়িবাঁধ হলে বাবার যেটুকু জমি আছে তা দিয়ে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকব। কিন্তু সিডরের পরেও প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে জমি হারিয়ে যাচ্ছে বলেশ্বর নদীতে। শুধু আমার একার না, এলাকার বেশির ভাগ মানুষেরই এমন দশা। আমরা ত্রাণ চাই না, আমাদের এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য একটি টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। এভাবে কথাগুলো বলছিলেন ঘূর্ণিঝড় সিডরে পরিবারের সাত সদস্যকে হারানো বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার উত্তর সাউথখালী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আল আমিন খান।
তিনি বলেন, সিডরের দিন সন্ধ্যার দিকে মা তাফালবাড়ি বাজারে পাঠান কিছু জিনিসপত্র কিনতে। কিন্তু তাফালবাড়ি বাজারে যাওয়ার পরে বৃষ্টি বাড়লে আমি আর বাড়ি আসতে পারিনি। যখন বাতাসের গতি বেড়ে যায় তখন আমি তাফালবাড়ি বাজারের একটি ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সারা রাত সে কী তান্ডব বাতাসের। দুশ্চিন্তায় রাত কেটে গেছে। ভোরের দিকে বাতাস কমে গেলে রাস্তায় বের হয়ে দেখি গাছ আর গাছ। হাঁটার কোনো উপায় নেই। অনেক কষ্ট করে বাড়িতে গিয়ে দেখি সেখানে ঘর-বাড়ির কোনো চিহ্ন নেই। বাড়িতে থাকা বাবা (আব্দুর রহমান), মা (সুপিয়া বেগম), ফুফু (হায়াতুননেছা), ফুফাতো বোন (হনুফা ও ফাতেমা), ভাগ্নে (আবু হানিফ) এবং নানিকে (নুর বানু) আর খুঁজে পেলাম না। পরের দিন ধান ক্ষেত, মানুষের বাগানসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের মরদেহ এনে কবর দিয়েছিলাম।