রক্ত দিয়ে এরশাদকে লেখা প্রেমিকার চিঠি
রাজনীতির মোকাবিলা করতে হয় রাজনীতি দিয়ে। দীর্ঘমেয়াদে অপরাজনীতি ভর করলে সর্বনাশ হয়ে যায় সুস্থধারার। ক্ষমতা ঘিরে নষ্ট-ভন্ডদের উত্থান হয়। আগাছা-পরগাছা ভর করে বটবৃক্ষে। জঙ্গলে ঢেকে যায় চারপাশটা। খাঁটিরা নীরব অভিমানে দূরে সরে যায়। শুরু হয় নকলদের সুসময়। চকচকে ভাবের কারণে আসল-নকল আলাদা করা যায় না। উইপোকা মাটির ঢিবি বানায় সুন্দর করে, কিন্তু সে মাটি কোনো কাজে লাগে না। কোনো কিছু উৎপাদনও হয় না। ঝুরঝুরে মাটিতে পা রাখলেই শেষ। ঘুণপোকার খেয়ে ফেলা কাঠ দেখতে শৈল্পিক মনে হয়। কিন্তু মানুষের বসতঘর শেষ হয়ে যায়। ইতিহাসের অনেক ক্ষণ থাকে। আড়াল থাকে। আমরা ছোটবেলায় পড়েছি ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খিলজি মাত্র ১৭ জন লোক নিয়ে বাংলা দখল করেছিলেন। ল²ণ সেন পালিয়েছিলেন পেছনের দরজা দিয়ে। বাংলা দখল করলেন খিলজি। ইতিহাসের লেখনীও তাঁর পক্ষে! এ বয়সে দেখছি আফগানিস্তানে আড়াই লাখ প্রশিক্ষিত সেনা আত্মসমর্পণ করেছে, অথবা সব ছেড়ে পালিয়েছে তালেবান আসছে শুনে। আড়াই লাখের বিপরীতে তালেবান ৭০ হাজার মাত্র। ঘুমপাড়ানি ইতিহাস দেশে দেশে আছে। একদল ইংরেজ বেনিয়া নিজের দেশে সুবিধা করতে না পেরে এ দেশে এসেছিল বাণিজ্যে। তাদের বাংলা-বিহার-ওড়িশার ক্ষমতা দিল মীরজাফররা। বাংলা দিয়ে শুরু। এরপর গোটা ভারতবর্ষের মালিকানা ধীরে ধীরে নিয়ে নিল ইংরেজ বেনিয়ারা। শেষ মুঘল সম্রাটকে বন্দী করে পাঠাল রেঙ্গুনে (ইয়াঙ্গুন) নির্বাসনে। তাঁর সন্তানদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে রাখল দিল্লির পুরান বাজারে। দিল্লির শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন সেই ফকির যার কাছে তিনি নিরাপদ মনে করে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ ভূখন্ডের মানুষের ভিতরে-বাইরে দুই রকম চরিত্র। নিজের সুখ অন্যের মাঝে বিলিয়ে আনন্দ নেয় সবাই। বোঝার চেষ্টাও করে না এ আনন্দ ক্ষণস্থায়ী। বেইমানি আর বিশ্বাসঘাতকতা করা সব যুগে থাকে। ক্ষমতার চারপাশটায় মোশতাকদের দেখা যায়। তাজউদ্দীনরা থাকেন না অথবা থাকতে পারেন না। ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে তাদের সরে পড়তে হয় নীরব অভিমানে। দুঃসময়ের মানুষ সুসময়ে ঠাঁই পান না। এক ধরনের নীরব অভিমান নিয়েই চলতে হয় তাদের।