মহানগরে চৌকস পার্কিং ব্যবস্থাপনা কবে হবে
খাদ্যনীতির ওপর একটি ডিপ্লোমা করার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পদার্পণ করি। সেখানে মিসিসিপি নদী-বিভক্ত মিনেসোটা স্টেটের রাজধানী দ্বৈতনগরী মেনিয়াপোলিস ও সেইন্ট পলে অবস্থিত মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসাধিককাল লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হয়েছিল। পাতলা জনবসতির এই স্টেটে যেখানে একতলা দোতলা দালানই বেশি, বহুতল ভবন কালেভদ্রে দেখা যায়, সেখানে মাটির নিচের অবকাঠামো দেখে তখন বেশ অবাকই হয়েছিলাম। মাটির নিচ দিয়ে মিসিসিপি ভেদ করে মিনেসোটা থেকে সেইন্ট পল যাওয়ার যে সুড়ঙ্গ করা হয়েছে, শীতপ্রধান এই দেশে তার একটা মানে খুঁজে নিয়েছিলাম; কিন্তু মাটির তলায় তিন চার তলা মোটর গাড়ির পার্কিং সুবিধা গড়ে তোলার কারণ ঠাহর করতে পারছিলাম না। কিছুদিন যেতে না যেতেই লক্ষ করলাম উভয় নগরীর অনেক স্থানে এক ধরনের সাইনবোর্ড বিশেষ একটা বার্তা ঘোষণা করছে: ‘অবৈধভাবে পার্ক করা গাড়ি মালিকের নিজ খরচে টানিয়ে লওয়া হবে’ (towed away at owners’ expenses)। টানিয়ে নেওয়ার বিষয়টা তখন বোধগম্য হলেও মালিকের নিজ খরচের বিষয়টায় খটকা লাগছিল। আমাদের দেশে মাঝেমধ্যে র্যাকার দিয়ে গাড়ি টেনে নেওয়া, অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখেছি, কিন্তু খরচ আদায়ের কথা চিন্তার মধ্যেও আসেনি। তখন আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্রী সুন্দরী সামান্থা বুঝিয়ে বলল যে, সরকার কারও অবৈধ কাজের জন্য নিজ পকেট থেকে পয়সা গুনতে পারে না। কেবল তখনই এই বঙ্গ বুদ্ধু বুঝতে পারল এই দ্বৈতনগরী কেন এত পরিপাটি ও জঞ্জালমুক্ত।
- ট্যাগ:
- মতামত
- গাড়ি
- পার্কিং ব্যবস্থা