৮ মাস তেলশূন্য চিলমারী ভাসমান ডিপো

মানবজমিন চিলমারী প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস থেকে তেলশূন্য পড়ে আছে চিলমারীর ভাসমান ডিপো। অবহেলা আর অযত্নে পড়ে থাকলেও নেই যেন কর্তৃপক্ষের নজর। ব্যাপক চাহিদা থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে করছেন মানবেতর জীবনযাপন। এদিকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে বন্যা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরাও পড়েছেন বিপাকে। এমনকি অজ্ঞাত কারণে ট্যাংকলরিতে তেল দেয়া বন্ধ থাকায় প্রায় ৮ বছর থেকে বেকার হয়ে কষ্টে দিন কাটচ্ছেন লরি শ্রমিকরা। ডিপো স্থায়ীকরণ, নিয়মিত তেল সরবরাহসহ সব ধরনের সমস্যার সমাধান চান এলাকাবাসী।  জানা গেছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, দিনাজপুরসহ কয়েকটি জেলার জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে ১৯৮৯ সালে তিনটি কোম্পানি চিলমারীতে স্থাপন করেন ভাসমান ডিপো। স্থাপনের কিছুদিন পর মেরামতের অজুহাতে পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড তাদের বার্জ সরিয়ে নেয়। তবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম কোম্পানি লিমিটেড ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ভাসমান ডিপো নিয়মিত তেল সরবরাহ করে আসছিল। দিনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তেলের চাহিদাও বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ডিপো দু’টি থেকে তা পূরণ করার চেষ্টা করে কোম্পানি। কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা নিজেদের লাভের আশায় ভিন্নভাবে নেয় অনিয়মের আশ্রয়। শুধু তাই নয় ডিপো দু’টি থেকে পার্শ্ববর্র্তী জেলা লালমনিরহাট, দিনাজপুর, রংপুরের বিভিন্ন স্থানে ট্যাংকলরির মাধ্যমে তেল সরবরাহ করা হলেও সেটি কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ছত্রছায়ায় কৌশলে বন্ধ করে দেয় ট্যাংকলরি। ট্যাংকলরি বন্ধ হওয়ায় কয়েক বছর থেকে প্রায় দুই শতাধিক লরি শ্রমিক বেকার সময় কাটাচ্ছেন। ট্যাংকলরি বন্ধ হওয়ায় পর থেকে কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে ডিলারসহ বিপাকে পড়েন কৃষক। ফলে তেলের চাহিদা মেটাতে ওই এলাকার ডিলাররা বাঘাবাড়ি, পার্বতীপুরসহ দূর থেকে তেল নিয়ে আসলেও মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সময় তেলশূন্য হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। এদিকে ট্যাংকলরি বন্ধ হওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুরসহ জামালপুর, গাইবান্ধার কিছু এলাকায় ডিপো দু’টি থেকে তেল সরবরাহ করা হলেও দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না এবং বাড়ছে কৃষকদের মাঝে হতাশ। এদিকে তেলের চাহিদা মেটাতে ডিলাররা অতিরিক্ত ব্যয়ে দূর-দূরান্ত থেকে তেল আনলেও এদিকে সময়মতো তেল পারছে না ক্রেতা অন্যদিকে বেড়েছে মূল্য। সেই সঙ্গে শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে করছেন মানবেতর জীবনযাপন। পুটিমারী, সরদারপাড়াসহ বেশকিছু এলাকার কৃষকরা জানান, জনগণের সুবিধার জন্য তেল ডিপো স্থাপন করা হলেও তেল সরবরাহ না থাকায় চড়া মূল্যে তেল কেনা লাগছে এছাড়াও ১ লিটার তেল আনতে পাম্পে বা সদরে যেতেও ১৫-২০ টাকা খরচ হচ্ছে। রংপুর বিভাগ ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন চিলমারী সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রিয়াজুল হক বলেন, তেলের চাহিদাসহ সরকার নির্ধারিত মূল্যে এ অঞ্চলের কৃষক যেন তেল পায় সে জন্য প্রায় ৩০ বছর আগে ভাসমান ডিপো স্থাপন করা হয়। কিন্তু নজরদারির অভাব আর দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে লরি বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে তেল সরবরাহও বন্ধ রাখায় শত শত মানুষের রুজি বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ বন্ধ, রোজগার বন্ধ- ঘরে নেই খাবার উল্লেখ করে শ্রমিক খয়বার, সুলতানসহ অনেকে জানান এই অঞ্চল থেকে প্রায় ৫ মাস কাজ থাকে, বাকি সময় কাজ না থাকায় অনেকে এলাকা ছেড়ে বাইরে গেলেও অনেকে বেকার সময় কাটান আর এই ডিপো দু’টির ওপর অনেকের রুজি হতো কিন্তু সেটিও অচল হওয়ায় কষ্ট বাড়ছে। যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড চিলমারী ভাসমান ডিপো সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তেলশূন্য রয়েছে ডিপো। এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম কোম্পানি লিমিটেড চিলমারী সূত্রে জানা গেছে তাদের তেলবাহী জাহাজ মার্চ মাসে এলেও তা দ্রুত শেষ হয়। তবে এর দ্রুত সমাধান করা হবে বলে জানালেন ডিপো ইনচার্জগণ। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্‌ বলেন ডিপো দু’টি স্থায়ীকরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে আর তেল সরবরাহ বন্ধ আছে- বিষয়টি আমার জানা ছিল না, তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান। ডিপো দু’টি স্থায়ীকরণ করা হোক প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, শ্রমিক-কৃষকদের কথা চিন্তা করে আমরা চেষ্টা করছি এর সমাধানের জন্য।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও