মেঘনায় পাঁচবার বসতভিটা হারিয়েও বেঁচে থাকার লড়াই
পারভীন বেগম। বয়স (৪০)। মেঘনার ভয়াল থাবায় সব হারিয়েছেন তিনি। যে মেঘনা নিয়েছে ঘর-বাড়ি, জমি-জমা করেছে নিঃস্ব, সেই মেঘনা নদীকে ঘিরেই বেঁচে থাকার প্রাণপণ লড়াই করছেন পারভীন। মেঘনার করাল গ্রাসে বসতি বদলেছেন প্রায় ৫ বার। এখন সর্ব শেষ আশ্রয় নিয়েছেন ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের মঙ্গলসিকদার লঞ্চঘাট এলাকার বেড়িবাঁধে। এখানে বর্তমানে নদী ভাঙন আতঙ্ক নেই। তবে সংসারে রয়েছে অভাব। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে তাকে রেখে চলে গেছেন অন্যত্র। এখন সংসারে রয়েছে দুই সন্তান ও বৃদ্ধ মা। সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই। বেড়িবাঁধের পাড়ে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকেন সন্তান আর বৃদ্ধ মাকে নিয়ে। বড় ছেলে শান্ত। পারভীনের সংসারে উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি এই শান্ত। ছোট বেলা থেকেই শান্ত দেখেছে সংসারের অভাব-অনটন। তাই মাত্র ১৭ বছর বয়সেই নেমে পড়েছেন জীবনযুদ্ধে। হাল ধরেছে সংসারের। প্রতিদিন নদীতে যায় মাছ শিকারে। সারাদিন মাছ শিকারের পর ভাগ্যে জুটে এক-দুটি ইলিশ আর দেড় থেকে দুইশত টাকা। তা দিয়েই কোনো মতে চলে তাদের সংসার।এই পারভীন বেগমের মতো বেড়িবাঁধের পাড়ে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। যাদের অনেকেরই এক সময় ছিল সামাজিক অবস্থান আর নিজেদের বিশাল সম্পত্তি। তবে নির্দয় মেঘনা গিলে খেয়েছে সব সম্পত্তি। তাই এখন আশ্রয় আর মাথা গোঁজার জায়গা বলতে এই বেড়িবাঁধটিই শেষ ভরসা তাদের। আর বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বলই সর্বনাশা নদী। এরা এখন একটি স্থায়ী বসত চায়। এজন্য সহযোগিতা চান সরকারের।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- বেঁচে যাওয়ার গল্প